1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত

১৪ মার্চ ২০১২

ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সংশয় যতই জোরালো হচ্ছে, সেদেশের পরমাণু স্থাপনার উপর ইসরায়েলি হামলার সম্ভাবনাও ততটাই বেড়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু এমনটা ঘটলে তার পরিণাম নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্ব৷

https://p.dw.com/p/14K7s
ARCHIV - Der iranische Präsident Mahmud Ahmadinedschad bei einer Rede in der Urananreicherungsanlage in Natans (Archivfoto vom 09.04.2007). Dem Iran sind einem Medienbericht zufolge weitere Fortschritte in seinem umstrittenen Atomprogramm gelungen. Erstmals sei ein eigener Kernbrennstab hergestellt worden, schrieb die iranische Nachrichtenagentur Fars am Sonntag. Er habe die notwendigen Tests bestanden und stehe zum Einsatz in einem Forschungsreaktor in Teheran bereit. Eine offizielle Bestätigung dafür gab es zunächst nicht. EPA/ABEDIN TAHERKENAREH +++(c) dpa - Bildfunk+++
Iran Atomprogramm Ahmadinedschadছবি: picture alliance / dpa

ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিশেষ প্রেক্ষাপট

রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল নিজের অস্তিত্বের সংকট নিয়ে শুরু থেকেই চিন্তিত৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জগতের নিশ্চিত সমর্থন ও সহায়তা সত্ত্বেও নাৎসি জার্মানিতে ‘হলোকাস্ট' বা ইহুদি নিধন যজ্ঞের দুঃস্বপ্ন গোটা ইহুদি জাতির মনেই গভীর ক্ষত রেখে গেছে৷ ঠাণ্ডা মাথায় প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের হত্যালীলার পুনরাবৃত্তি যে আর হবে না, সেবিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন৷

Israel Premierminister Benjamin Netanjahu American Israel Public Affairs Committee Iran
ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুছবি: AP

ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে জটিল সম্পর্ক, সিরিয়ার মতো প্রতিবেশী বা সমগ্র আরব জগতের বৈরী অবস্থান যতই বিপজ্জনক মনে হোক না কেন, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় আঘাত আসতে পারে ইরানের কাছ থেকে – গত প্রায় এক দশক ধরেই ইসরায়েল এমনটা আশঙ্কা করছে৷ চলছে তার বিশাল প্রস্তুতি৷ ইসরায়েলের বক্তব্য, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে একবার আঘাত হানলে আর কিছুই করার থাকবে না৷ যা করার আগেই করতে হবে৷ সরাসরি ইরানের পরমাণু স্থাপনার উপর আগাম আঘাত হানতে হবে, অস্ত্র কর্মসূচি অকেজো করে দিতে হবে৷

হামলার প্রস্তুতি

এর আওতায় ইসরায়েলের বোমারু বিমান দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে হামলার প্রশিক্ষণ নিয়ে চলেছে৷ পাল্টা হামলা রুখতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে এবং পাহাড়ের মধ্যে বা মাটির নিচে গোপন পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করতে ‘বাংকার বাস্টার' বোমা প্রয়োগ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে৷ এমন বিচ্ছিন্ন সামরিক হামলার ফলে ইরানের গোটা পরমাণু কর্মসূচি একেবারে অকেজো হয়ে পড়বে – এমনটা কেউ আশা করছে না৷ তবে সঠিক স্থাপনায় সফলভাবে আঘাত করতে পারলে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি এক ধাক্কায় বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন এই নীতির প্রবক্তারা৷

Sturm für israelische Luftwaffe
প্রস্তুতি চলছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীরছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb

কূটনৈতিক তৎপরতা

সামরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি চলছে তর্জন-গর্জন৷ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মঞ্চে ইরানের প্রতি হুমকি দিয়ে চলেছেন এবং এর পক্ষে যতটা সম্ভব আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন৷ সম্প্রতি ওয়াশিংটনে গিয়েও তিনি এই নীতির প্রশ্নে মার্কিন প্রশাসনের সংশয় দূর করার চেষ্টা করেছেন৷ মার্কিন বাহিনী সরাসরি এমন হামলায় অংশ না নিলেও পরোক্ষভাবে ইসরায়েলকে সাহায্য করবে, এমনটাই নিশ্চিত করতে চান নেতানিয়াহু৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা অবশ্য সংলাপের পথ পুরোপুরি বন্ধ করতে প্রস্তুত নন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার নীতি ওদের তোয়াজ করা নয়, আমার উদ্দেশ্য হলো ওরা যাতে আদৌ পরমাণু অস্ত্র হাতে না পায়৷ কারণ সেটা হলে গোটা অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে৷ সন্ত্রাসবাদীদের হাতে সেই অস্ত্র চলে যেতে পারে৷ ইসরায়েল সহ সব সহযোগীদের সঙ্গে আমরা এবিষয়ে আলোচনা করে চলেছি৷ আমি এখনো মনে করি, কূটনৈতিক পথে সংকটের সমাধান করা সম্ভব৷''

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের মনোভাবের ফলে আন্তর্জাতিক মহলে সংশয় বেড়ে চলেছে, একথা ঠিক৷ কিন্তু পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে ইরানের কত সময় লাগতে পারে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে৷ ইসরায়েলের দাবি, বেশি দেরি নেই৷ অতএব সেটা থামাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতেই হবে৷ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক মনে করেন, হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে গোটা বিশ্ব এই অঘটন থামাতে পারবে না৷

Israelisches Manöver über den Golan Höhen
ইরানে গিয়ে আঘাত হানা বড় চ্যালেঞ্জছবি: picture alliance/dpa

হামলার কৌশল ও পরিণাম

শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল সত্যি ইরানের উপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও সেই অভিযান মোটেই সহজ হবে না৷ ইসরায়েলের বোমারু বিমানের সংখ্যা ৩০০র মতো, কিন্তু ১০০ বিমান এত লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে হামলার উপযুক্ত৷ সেদেশের হাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া ‘বাংকার বাস্টার' ও অন্যান্য বোমার সংখ্যাও কম নেই৷ কিন্তু মাঝ আকাশে এই সব বিমানের জ্বালানি ভরার প্রয়োজন হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ গোটা অঞ্চলে ইসরায়েলের এমন কোনো মিত্র দেশ নেই, যা কৌশলগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত৷

১৯৮১ সালে ইরাক ও ২০০৭ সালে সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলা চালিয়েছিল বটে, কিন্তু সেগুলি ছিল ছোট আকারের বিচ্ছিন্ন অভিযান৷ ইরানের নাতান্স বা ফরদো পরমাণু কেন্দ্র ইসরায়েল থেকে প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দূরে৷ এমনকি জর্ডান ও ইরাকের আকাশ সীমা অতিক্রম করে সবচেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে গেলেও যথেষ্ট ঝুঁকি থেকে যায়৷ এই দুই দেশের কাছে ইসরায়েলি বিমান থামানোর ক্ষমতা না থাকলেও কূটনৈতিক স্তরে তীব্র অস্বস্তিতে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সৌদি আরব বা তুরস্কের আকাশ সীমা ব্যবহারের সম্ভাবনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক সমস্যা৷ কোনো দেশই ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার শিকার হতে চায় না৷ তার উপর ইরানের হাতেও মাঝারি ও দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে৷ লেবাননে হেজবোল্লাহ বা গাজায় হামাস ইসরায়েলের হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান