ইইউ বিরোধীদের শক্তি বাড়লো
২৫ মে ২০১৪ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিসিয়াল প্রোজেকশন বলছে, লুক্সেমবুর্গের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকার-এর রক্ষণশীল শিবির ‘ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি’ সংসদের ৭৫১টির মধ্যে ২১১টি আসন পেতে যাচ্ছে৷ এর পরে থাকবে জার্মানির রাজনীতিক মার্টিন শুলৎসের নেতৃত্বাধীন সামাজিক গণতন্ত্রী শিবির৷ তারা ১৯৩টি আসন পেতে পারে৷ আর ইইউ বিরোধী দলগুলো সব মিলিয়ে প্রায় ১৩০টির মতো আসন পাবে৷
ফ্রান্সে মোট ভোটের প্রায় ২৫ শতাংশ পেয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছে ইইউ বিরোধী ‘ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ বা এনএফ৷ দলটি চায় ফ্রান্স ইউরো বাতিল করুক এবং ইইউ থেকে বের হতে গণভোটের আয়োজন করুক৷ এনএফ পার্টির এমন উত্থানকে ‘রাজনীতির ভূমিকম্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী৷ এদিকে, এনএফ পার্টির প্রধান ল্য পেন বলেছেন, ‘‘জনগণ পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তাঁরা আর বাইরের শক্তি তথা ইইউ কমিশনার, অনির্বাচিত আমলাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে চায় না৷ নিজেদের ভাগ্য তাঁরা নিজেরাই নির্ধারণ করতে চায়৷’’
ফ্রান্সের এই ফলাফল তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আসন বণ্টন হয় ২৮টি দেশের জনসংখ্যার প্রেক্ষিতে৷ সে হিসেবে ফ্রান্স থেকে এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৪ জন সাংসদ ইউরোপীয় সংসদে বসবে৷ আর এনএফ ২৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার মানে হলো ইউরোপীয় সংসদে এবার ফ্রান্সের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন প্রতিনিধি থাকবেন যারা চরমভাবে ইইউ বিরোধী৷
ব্রিটেন থেকেও ইইউ বিরোধী দল ইউকেআইপি ভালো করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ ইইউ সংসদে ব্রিটেনের আসন সংখ্যা ৭৩টি৷ ঐ সংসদে সবচেয়ে বেশি আসন প্রাপ্য জার্মানির, ৯৬টি৷ আশার কথা সেখানে ইইউ বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি’ পেয়েছে প্রায় সাত শতাংশ ভোট৷ জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ৷ যদিও তাদের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ২০০৯ সালের চেয়ে এবার কমে গেছে৷
গ্রিসে সরকারের ব্যয় সংকোচ নীতির বিরোধী হিসেবে পরিচিত চরম বামপন্থি সিরিজা পার্টি সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে চলেছে৷ সংসদে গ্রিসের প্রতিনিধি সংখ্যা এবার ২১৷
ডেনমার্কে ২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছে অভিবাসন বিরোধী ডেনিশ পিপলস পার্টি৷
বিশ্লেষকরা মনে করছেন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে চরম ব্যয় সংকোচ নীতি গ্রহণ করায় ইইউ তথা ইউরোর প্রতি মানুষের বিরূপ মনোভাব এসেছে৷
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় চারশো মিলিয়ন৷ এর মধ্যে ভোট দিয়েছে প্রায় ৪৩.১১ শতাংশ৷ ২০০৯ সালে সংখ্যাটা ছিল ৪৩ শতাংশ৷ সে হিসেবে কিছুটা হলেও এবার ভোট দেয়ার হার বেড়েছে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, এপি)