1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইইউ-র জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা সঠিক পথে ক্ষুদ্র পদক্ষেপ

গ্রেহেম লুকাস / এআই২৪ অক্টোবর ২০১৪

কয়েকমাস ধরে আলোচনার পর ইইউ নেতারা ২০৩০ সালের জন্য জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন৷ চলতি বছরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তুতি এটি, মনে করেন ডয়চে ভেলের গ্রেহেম লুকাস৷

https://p.dw.com/p/1Dbc6
EU Gipfel in Brüssel
ছবি: Carl Court/Getty Images

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা গত কয়েকবছর ধরেই লক্ষ্য করছি৷ হিমালয় কিংবা উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুর বরফ গলার খবর নিয়মিতই পত্রিকার পাতায় দেখা যায়৷ প্যাসিফিক আইল্যান্ডগুলো এবং বাংলাদেশের মতো নিচু দেশগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণের ক্ষতির মুখে রয়েছে৷ মোটের উপর, কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করায় সমুদ্রে ‘অ্যাসিডিটি'-র পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গত কয়েকবছর ধরে পরিবেশবাদী এবং তথাকথিত জলবায়ু সংশয়বাদীদের মধ্যে বিরোধ লক্ষ্য করা গেছে৷ আশার কথা হচ্ছে, এখন এটা সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য যে মানবজাতির উন্নয়নের জন্য নেয়া বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের হার বাড়ছে৷ ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

তবে কষ্টের কথা হচ্ছে, এই সমস্যা সহসাই চলে যাবে না৷ সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে৷ তাই সঙ্গত কারণেই এটা প্রত্যাশা করা যায় যে আমাদের রাজনীতিবিদরা এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন৷

Juncker im Europaparlament 22.10.2014 PK nach der Abstimmung
ইইউ প্রেসিডেন্ট হ্যার্মান ফান রম্পয়ছবি: Reuters/Christian Hartmann

এখন পর্যন্ত আমরা যেসব উদ্যোগ নিয়েছি সেগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমাতে খুব একটা ভূমিকা রাখেনি৷ বারংবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছি৷ এর অন্যতম কারণ পশ্চিমা জনমত জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তাদের জীবনযাপন, যেখানে প্রচুর জ্বালানি খরচ হচ্ছে, পরিবর্তন আনতে বিশেষ আগ্রহী নয়৷ তবে এখন পদক্ষেপ বা উদ্যোগ অবশ্যই নিতে হবে, কেননা মানবজাতির ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে৷ আর পদক্ষেপ নেয়ার অর্থ হচ্ছে ‘ফসিল ফুয়েল' পোড়ানো কমিয়ে পুর্ননবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো৷ বিশ্বের বর্তমান জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই বিষয়টি বুঝবে এবং পদক্ষেপ নেবে, যদি তাদের তা বোঝানো হয়৷

এক্ষেত্রে মূল সমস্যা হচ্ছে, ঠিক কী পদক্ষেপ নিতে হবে তাতে সবার সম্মত হওয়া এবং কত দ্রুত সেটা নেয়া যাবে তা নির্ধারণ করা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের হার ১৯৯০ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে৷ এটা সংবাদপত্রে প্রকাশ হওয়ার মতোই খবর৷ তবে আমি মনে করি, হ্রাসের এই লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অপর্যাপ্ত৷

ইউরোপীয় দেশগুলো বর্তমানে অনেকটাই ‘ফসিল ফুয়েল'-এর উপর নির্ভরশীল৷ যদিও সবুজ জ্বালানি জনপ্রিয় করতে অনেক উদ্যোগ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে, তবুও বিষয়টা আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছায়নি৷ একথা স্বীকার করতেই হবে, জার্মানি এক্ষেত্রে অন্য অনেক দেশের তুলনায় বেশি কাজ করেছে৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০২০ সাল নাগাদ জার্মানির রাস্তায় এক মিলিয়ন ইলেকট্রিক কার দেখতে চান৷ একই সময়ে জার্মানি পারমাণবিক জ্বালানি থেকে সরে আসতে চাচ্ছে কেননা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পারমাণবিক বর্জ্য এক বড় সমস্যা৷ আবার ম্যার্কেল চাচ্ছেন জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন কয়লাভিত্তিক শক্তি কেন্দ্র গড়ে তুলতে৷ কয়লা ব্যবহার করা হলে জার্মানির কয়লা শিল্প হয়তো লাভবান হবে, কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলায় এটা কার্যকর নয়৷

Deutsche Welle Grahame Lucas
গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Henriksen

আমি এটাও বুঝতে পারছি না, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০৩০ সাল নাগাদ জ্বালানির ব্যবহার ২৭ শতাংশ কমানোর উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা কী ভাবে বাস্তবায়ন করবে৷ অথচ ইইউ রাজনীতিবিদরা নাকি আরো বড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে চাচ্ছিলেন৷ কিন্তু বিশ্ব বাজারে ইউরোপের অবস্থান দুর্বল হওয়ার ভয়ে লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে৷ আর এই যুক্তির কারণে হয়ত চলতি বছরের শেষ নাগাদ একটি বৈশ্বিক সমঝোতায় পৌঁছানো কঠিন হবে৷ কেননা পশ্চিমা এবং এশীয় শিল্পোন্নত দেশগুলো যদি শুধু নিজেদের কথা চিন্তা করে, তাহলে কোনো সমঝোতা সম্ভব নয়৷ আসলে রাজনীতিবিদরা পরবর্তী নির্বাচন এবং তাদের নিজেদের দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করেন৷ ফলে এমনটা ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে অব্যাহত থাকবে আর তার খেসারত দিতে হবে অপেক্ষাকৃত গরীব দেশগুলোকে৷ যদিও সামগ্রিকভাবে এটা মানবজাতির ক্ষতি৷ আর তাই আমার মনে হয়, ইউরোপ যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা সঠিক পথে একটা ক্ষুদ্র পদক্ষেপ, তবে কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য