আসিফের জামিন নাকচ
৩ জুন ২০১৩রবিবার ঢাকার আদালতে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন এবং মশিউর রহমান বিপ্লবের জামিন আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়৷ কিন্তু শুনানি শেষে আদালত বিপ্লবকে জামিন দিলেও আসিফের জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন৷
বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এই বিষয়ে লিখেছে, ‘‘চার ব্লগারের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের দুটি মামলা আমলে নিয়ে আগামী ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন রেখেছে আদালত৷ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হক রোববার এই আদেশ দেন৷ ব্লগার মশিউর রহমান বিপ্লবের জামিন আবেদন মঞ্জুর করলেও আসিফ মহিউদ্দিনের আবেদন নাকচ করেছেন তিনি৷ অপর দুই ব্লগার সুব্রত অধিকারী শুভ ও রাসেল পারভেজকে গত ১২ মে জামিন দিয়েছিলেন একই বিচারক৷''
গত জানুয়ারিতে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত আসিফ মহিউদ্দীনের জামিন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে৷ সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে আসিফের বোন জুয়েলা জেবুন্নেসা খান লিখেছেন, ‘‘চারজন ব্লগারকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তিনজনকে ছেড়ে দিলেও আসিফকে ছাড়েনি৷ আর যারা আসিফকে কুপিয়ে ছিল তাদের সরকার কি ব্যাবস্থা করল জনগণ তা জানতেই পারলনা৷''
এদিকে, আসিফ মহিউদ্দীনকে নিয়ে লেখা কয়েকটি ফেসবুক নিবন্ধ প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার পর ফেসবুক থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, একসঙ্গে অনেকে এসব নিবন্ধের বিরুদ্ধে ফেসবুকে রিপোর্ট করায় তা ফেসবুক থেকে মুছে গেছে৷
সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট ফারুক ওয়াসিফ এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘‘আসিফের মুক্তি চাওয়া স্ট্যাটাস মুছে দিয়েছে ‘ওরা'৷ জানি না ওরা ‘কারা'? স্ট্যাটাসে বলেছিলাম, আসিফের প্রাণনাশের চেষ্টা এবং ব্লগারদের আটক আর কবি দাউদ হায়দারের দেশছাড়া ঘটনার মিল হচ্ছে, দুটোই ঘটেছে লীগ আমলে৷ দাউদের বেলায় লীগ-জামাত অলিখিত ঐক্য হয়েছিল কিছু কিছু জায়গায়: পাবনা তার অন্যতম৷ সেই থেকে সেখানে জামাত শক্তিশালী৷ ব্লগারদের গ্রেফতারের বেলায়ও লীগ-হেফাজত সন্ধি দেখা যায়৷ উপসংহারে আমি দাবি করেছিলাম: লীগের বাইরে বাম তো দূরের কথা মুক্তিযুদ্ধবাদী হওয়াও যেন নিষিদ্ধ!''
নিজেকে নাস্তিক হিসেবে পরিচয় প্রদানকারীর ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনের মুক্তির দাবিতে তৈরি ফেসবুক পাতা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে৷ ‘ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন' পাতায় সোমবার লেখা হয়েছে, ‘‘কালকে আসিফের জ্বরের কথা উল্লেখ করে একটা স্ট্যাটাস লিখলাম, জামিন হয়নি তখন দুপুরে একটা স্ট্যাটাস লিখলাম৷ কারা যেন রিপোর্ট করে রিমুভ করে দিছে৷ কই যে যাই৷ জলে কুমির ডাঙায় বাঘ৷''
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড দ্য বব্স-এর ‘সেরা সামাজিক আন্দোলন' বিভাগে ‘ইউজার প্রাইজ' জয় করেন আসিফ মহিউদ্দীন৷ এপ্রিলে এই ব্লগার গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই সামহয়্যার ইন ব্লগে থাকা তাঁর সকল নিবন্ধ মুছে ফেলে সরকার৷ বর্তমানে তিনি কারাবন্দি থাকলেও তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে ‘লগ-ইন' করছে কোনো একটি পক্ষ৷ গ্রেপ্তারের পর আসিফকে পাঠানো ফেসবুক বার্তা দেখা হয়েছে বলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিশ্চিত করেছে ফেসবুক৷