আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্ক
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন রবিবার রাতে কারজাই ও জারদারির জন্য একান্তে নৈশভোজের আয়োজন করেন৷ মূল আলোচনা শুরু হয় সোমবার সকালে৷ উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই মাসে কাবুল ও সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কে এমন ত্রিপাক্ষিক আলোচনা আয়োজন করা হয়েছিল৷ লন্ডন বৈঠকের মাস ছয়েক মধ্যে এক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানান কারজাই ও জারদারি৷ তাছাড়া, তালেবানকে আলোচনায় অংশ নিতে উৎসাহ দিতে কাতারের রাজধানী দোহায় একটি দপ্তর খোলা হবে৷ দলমত নির্বিশেষে আফগানিস্তানে যে শান্তি পরিষদ গঠন করা হয়েছে, সেই পরিষদই তালেবানের সঙ্গে সংলাপ চালাতে পারবে৷
সোমবার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি-জারদারির সঙ্গে ক্যামেরনের এই ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে উৎসাহ দেওয়া৷ কারণ ২০১৪ সালে ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে গোটা অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাবার আশঙ্কা করছেন অনেকে৷
ব্রিটেন সেইসঙ্গে তালিবানকেও আলোচনার টেবিলে আনতে চায়৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেন, আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার এটাই সঠিক সময়৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি আফগান সরকার বেশ কয়েকজন তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিয়ে সংলাপে সদিচ্ছা দেখানোর চেষ্টা করেছে৷ এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে কারজাই বলেছেন, আফগানিস্তানে শান্তির পথে তালেবান মূল অন্তরায় নয়, বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের ফলেই সমস্যা হচ্ছে৷
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সব ক্ষমতা যে শুধু রাজনীতিকদের হাতে নেই, সে বিষয়ে বাকি বিশ্বের তেমন কোনো সন্দেহ নেই৷ তাই লন্ডনের আলোচনায় ক্ষমতাকেন্দ্রের সব পক্ষকেই স্থান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে৷ দুই দেশের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দুই দেশের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরাও৷ আফগানিস্তানের শান্তি পরিষদের প্রধানও দেশের মূল স্রোতের সব রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব করেছেন৷
পাকিস্তানের সক্রিয় ও আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি কার্যত অসম্ভব, সে বিষয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহ নেই৷ কারজাই ও ওবামা প্রশাসন বার বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার অভিযোগ এনেছেন৷
এদিকে ব্রিটেনে আফগানিস্তান সংক্রান্ত আলোচনার ঠিক আগেই সোমবার টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেল মালালা ইউসুফজাইকে৷ পাকিস্তানে তালেবানের গুলিতে আহত মালালাকে চিকিৎসার জন্য ব্রিটেনে আনা হয়েছিল৷ ঠোঁটের উপর দিকটা এখনো আড়ষ্ট থাকলেও ১৫ বছরের কিশোরী মালালা এক ভিডিও বার্তায় জানায়, সে প্রতি দিন একটু একটু করে সেরে উঠছে৷ বার্মিংহ্যামের এক হাসপাতাল সূত্র থেকে তার আগে বলা হয়, মালালার মাথার খুলি আবার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে অপারেশন করা হয়েছে৷ সে এখন আবার কানে শুনতেও পারছে৷ মালালার আরোগ্যের মধ্যেই আফগানিস্তান-পাকিস্তানে শান্তির প্রতীকি সূচনার আশা করছেন কেউ কেউ৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, এপি)