1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘হরতাল নিষিদ্ধ করা হোক’

২৬ নভেম্বর ২০১৩

বাংলাদেশে চলছে বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি৷ বরাবরের মতো এই কর্মসূচি পালনের সময়েও গাড়ি-বাড়ি পোড়ানো এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেছে৷ ব্লগার শেখ মোহাম্মদ রাসেল তাই আইন করে হরতাল বন্ধ করার পক্ষে৷

https://p.dw.com/p/1AOxS
A rickshaw passes a burnt bus after activists of Bangladesh Nationalist Party (BNP) vandalized and set fire to it during a country wide strike in Dhaka March 7, 2013. Bangladesh Nationalist Party and it's alliance called the daylong strike in protest against what it said were violence and killings by the police in their protest rally over war tribunals on Wednesday, local media reported. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: POLITICS CIVIL UNREST TPX IMAGES OF THE DAY)
ছবি: Reuters

সামহয়্যার ইন ব্লগে ‘আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ করা হোক' – এই শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ রাসেল৷ লেখার শুরুতে ‘হরতাল' শব্দের উৎপত্তি এবং হরতাল আসলে কেমন হওয়ার কথা, সে সম্পর্কে তিনি ধারণা দিয়েছেন এভাবে, ‘‘হরতাল শব্দটি মূলত একটা গুজরাটি শব্দ (গুজরাটিতে হাড়তাল) যা সর্বাত্মক ধর্মঘটের প্রকাশক৷ মহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন৷ হরতালের সময় সকল কর্মক্ষেত্র, দোকান, আদালত বন্ধ থাকে৷ তবে সাধারণত অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ারসার্ভিস, গণমাধ্যমসমূহ এর আওতার বাইরে থাকে৷''

উইকিপিডিয়া থেকে এসব তথ্য পরিবেশন করার কথাও জানিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ রাসেল৷ তারপর লিখেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় হরতালকে গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবেই মানা হয় – এই উক্তিটির চর্চা আমরা সব সময়ই করে থাকি৷ দাবি-দাওয়া, আলোচনা ও সমঝোতার মধ্য দিয়ে আদায় না হলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে চূড়ান্ত পর্যায়ে এই পন্থাটিকে ব্যবহার করা হয় প্রতিপক্ষকে বাধ্য করার জন্য৷ হরতালের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলা আদালত খারিজ করে দিয়েছে এই বলে যে, হরতাল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার৷ (সুত্র: প্রথম আলো ১১জুন ২০১২)''

কিন্তু তারপরই শেখ মোহাম্মদ রাসেলের লেখায় প্রকাশিত হয় হতাশা৷ বাংলাদেশে হরতালের অতীত এবং বর্তমানকে স্মরণ করতে গিয়েই মূলত এ হতাশার সূচনা৷ রাসেল লিখেছেন, ‘‘যে দলই বিরোধী দলে থাকুক না কেন, হরতালকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার বলে দাবি করে, আর সরকারি দলে থাকলে হরতাল বিরোধী কথা বলে৷ তবে ১৯৯০ সালের পর থেকে জাতীয় ইস্যু নিয়ে অথবা জনদাবি নিয়ে কোনো প্রধান বিরোধী দল হরতাল দেয়নি৷ যখনই তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন বাধাগ্রস্থ হয়েছে, তখনই তারা হরতালকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে৷ কোনো দলই হরতাল নিষিদ্ধ করার কথা ভাবেনি কখনো, কারণ, তারা জানে যে বিরোধী দলে গেলে হরতালই হবে তাদের একমাত্র হাতিহার৷''

এ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের হরতালের অতীতও তুলে ধরেছেন সামহয়্যার ইন ব্লগের এই ব্লগার৷ ‘আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলেও কখনো হরতাল দেবে না' – অতীতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন বক্তব্য দেওয়ার পরও ২০০১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ১৩০ দিন হরতালের ডাক দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷ তারপর আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি কখন কতদিন হরতালের কর্মসূচি পালন করেছে, তার একটা খতিয়ানও দিয়েছেন৷ হিসেবের আলোকে শেখ মোহাম্মদ রাসেল মনে করেন, ‘‘যে দলই বিরোধী দলে থাকুক না কেন, যখনই তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সংকুচিত হয়েছে তখনই হরতালকে ব্যাবহার করেছে তারা নিষ্ঠুরভাবে৷ শুধুমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে গত ২০ বছরে ৪৫০ দিনেরও বেশি হরতাল হয়েছে বাংলাদেশে৷''

হরতালকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাসে যে পরিমাণ সম্পদ এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তাতে শেখ মোহাম্মদ রাসেল খুব হতাশ৷ তাই তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশে হরতালের নামে যা শুরু হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷ জ্বালাও, পোড়াও, মানুষ হত্যা – এসব কোনো রাজনৈতিক অধিকার হতে পারে না৷ এই সব এ দেশকে চেটেপুটে খাওয়ায় এক নিষ্ঠুর বাহানা মাত্র৷ যে বাহানার মাসুল সাধারণ জনগণকে দিতে হয়, নেতাদের নয়৷ তাই আমরা চাই কঠোর আইন প্রয়োগ করে এ দেশ থেকে চিরতরে হরতাল নামক রাজনৈতিক নোংরা খেলাটি নিষিদ্ধ করা হোক৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য