ইসলামিক স্টেটের নতুন হুমকি
২৩ নভেম্বর ২০১৫আইএসের ম্যাগাজিনের নিবন্ধ নিয়ে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মতো দেশে আইএস তাদের কৌশলগত অবস্থান বাড়ানোর চেষ্টা করছে৷ ম্যাগাজিনে বাংলাদেশ বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রয়েছে৷
তবে আইএসের এই হুমকিকে আমলেই নিচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান কামাল ডয়চে ভেলেকে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আইএস বলে কিছু নেই৷ কয়েকজন জেএমবি জঙ্গি জামিনে ছাড়া পেয়ে নানা ধরনের হুমকি দেয়৷ এসব ফালতু বিষয়৷'' বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে৷ কোনো ধরনের শঙ্কা নেই৷''
দাবিক এর ১২তম সংস্করণে বাংলাদেশ নিয়ে ঐ নিবন্ধের লেখক আবু আবদির রহমান আল-বাঙালি৷ নিবন্ধে বাংলাদেশে চারটি হামলার দায় স্বীকারের দাবি করেছে আইএস৷ এতে বলা হয়, খিলাফতের সেনাদের সম্পৃক্ত একটি নিরাপত্তা সেল ইটালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিজারকে খুন করেছে৷ রাজধানী ঢাকার গুলশানের এক রাস্তায় গুলি করে ঐ বিদেশিকে হত্যা করা হয়৷ এর কয়েক দিনের মাথায় রংপুরে ঐ টিম এক জাপানি নাগরিককে খুন করে৷ ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে (হোসেনি দালান) হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও প্রায় ১০০ জনকে আহত করে আইএস৷
এছাড়া ঢাকায় এক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের ওপর হামলাও আইএস করেছে বলে নিবন্ধে দাবি করা হয়৷ এতে বলা হয়, পরপর এসব হামলা ক্রুসেডর রাষ্ট্রের জনগণের বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে৷ যে কারণে অনেক দেশ বাংলাদেশে তাদের নাগরিক, কূটনীতিক, পর্যটকদের চলাচল সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে৷ এখনো তারা ভীতিকর অবস্থার মধ্যে দিন পার করছে৷ নিবন্ধে বলা হয়েছে, আইএস নতুন করে আরো হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক সরকার ধারাবাহিকভাবে তথ্য বিভ্রাট ঘটাচ্ছে এবং ‘ব্লেম গেম' খেলছে৷
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহেদুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন নয় যে আইএস এখানে এসে এতবড় হামলা চালাবে৷ আমরা আরব বিশ্ব থেকে অনেকটাই দূরে৷ আমাদের যে ধরনের ঝুঁকি আছে, সেটা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ সব মুসলিম দেশগুলোতেই আছে৷ তবে এসব হুমকি উড়িয়ে দিলে হবে না৷ আমাদের সতর্কতার সঙ্গে তাদের হুমকির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে৷''
দাবিক এর নিবন্ধে বাংলাদেশে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) প্রশংসা করে এর প্রতিষ্ঠাতা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া শায়খ আবদুর রহমানকে ‘শহিদ মুজাহিদ' আখ্যা দেয়া হয়েছে৷ নিবন্ধে শায়খ আবদুর রহমান ও জেএমবির প্রশংসা করে বলা হয়, এর ফলে ইউরোপীয় উপনিবেশ ও হিন্দু সংস্কৃতির চাপে যে ভূখণ্ড শত শত বছর ‘শিরক' ও ‘বিদাতে' ডুবে ছিল, সেখানকার মুসলমানরা একটা আশার আলো দেখেছিল৷
আইএসের সাময়িকীতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে ‘মুরতাদ' বলে আখ্যায়িত করা হয়৷ জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর একটি ছবি দিয়ে তাতে লেখা হয়েছে, ‘মুরতাদপ্রধান'৷ নিবন্ধের শেষাংশে তারা বলেছে, তথাকথিত খিলাফতের সেনারা বেঙ্গলে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে এবং তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে যাবে৷
বাংলাদেশের প্রতি ‘ইসলামিক স্টেট’ সত্যিই কী আগ্রহী? আপনার মতামত লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷