৬৮তম বার্লিনালে: ফিরে দেখা ভাইমার যুগের চলচ্চিত্র
বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ‘রেট্রোস্পেক্টিভ বিভাগ’৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির একশ’ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এবার বিশেষ আয়োজন ‘ভাইমার-এরা’ সিনেমা রেট্রোস্পেক্টিভে৷
হারিয়ে যাওয়া রত্ন
এবারের ‘রেট্রোস্পেক্টিভ বিভাগে’ এমন সব চলচ্চিত্র দেখানো হয়েছে, যেগুলো বহুদিন কোথাও প্রচার হয়নি৷ ড্যানিশ পরিচালক উরবান গাদের ‘ক্রিস্টিয়ান ভানশাফে’ এমন একটা ছবি, যেখানে একজন শিল্পপতির বখে যাওয়া ছেলের কাহিনি বলা হয়েছে৷ দুই পর্বের এই ছবিটির প্রথম পর্ব ‘ওয়ার্ল্ড আ ফায়ার’ প্রকাশ পায় ১৯২০ সালে এবং ১৯২১ সালে ‘দ্য স্কেপ ফ্রম দ্য গোল্ডেন প্রিজন’ নামে৷ প্রায় একশ’ বছর পর আবারও সিনেমাটি দেখতে পেলো দর্শক৷
যুদ্ধের ভয়াবহতা
লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালকদের কাছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ হাইনৎস পলের স্বল্প পরিচিত যুদ্ধবিরোধী চলচ্চিত্র ‘দ্য আদার সাইড’ হলো ১৯৩০ সালের মার্কিন চলচ্চিত্র ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’-এর জার্মান সংস্করণ৷
রঙিনের অগ্রদূত
এই বিভাগে কেবল যে সাদা-কালো বা আংশিক রঙিন চলচ্চিত্র দেখানো হয়েছে তা কিন্তু নয়, যেসব পরিচালক চলচ্চিত্রে রঙের প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা করেছেন, তাদের চলচ্চিত্রও স্থান পেয়েছে এতে৷
রূপালি পর্দায় বিমূর্ত শিল্প
‘ভাইমার এরা’ চলচ্চিত্র ধীরে ধীরে বর্নিল, পরীক্ষামূলক এবং সাহসী হয়ে উঠেছে৷ নাৎসি শাসনের অধঃপতনকে এসব চলচ্চিত্রে বিমূর্ত শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
একটি বিয়োগান্তক প্রেমের গল্প
এরিক ভাসনেকসের ‘ডকস অফ হামবুর্গ’ চলচ্চিত্রটি ১৯২৮ সালে মুক্তি পায়৷ একজন নাবিকের গল্প এটি, যেখানে এক নারীর সঙ্গে প্রেমের পর, সেই নারীর প্রোরোচনায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে৷
এবং আরেকটি বিয়োগান্তক প্রেমের গল্প
‘দ্য ডেভিয়াস পাথ’ স্বল্প পরিচিত একটি চলচ্চিত্র৷ ধারণা করা হয়েছিল ৯০ এর দশকে এটি খোয়া গেছে৷ ১৯২৮ সালের এই চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রীয় চরিত্র এক দম্পতির, যারা বৈবাহিক সংকটের মধ্য দিয়ে যায়৷
লেনি রিফেনস্টালের অভিষেক
নাৎসিদের পক্ষে প্রচারণামূলক চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে লেনি’র নাম৷ ত্রিশের দশকে তিনি এমন বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন৷ এবারের উৎসবে তার পরিচালিত ‘দ্য ব্লু লাইট’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন হয়েছে, যা ১৯৩২ সালে মুক্তি পায়৷
প্রথম ‘টিনএজ’ চলচ্চিত্র
এবারের রেট্রোস্পেক্টিভ বিভাগে তিনটি ভাগ ছিল– ইতিহাস, বৈচিত্রমূলক এবং দৈনন্দিন জীবনের গল্প৷ রিচার্ড ওসভাল্ডের ১৯২৯ সালের চলচ্চিত্র ‘স্প্রিং অ্যাওকেনিং’ জার্মান কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যৌনতা এবং বয়ঃসন্ধির ব্যাপারে সচেতনামূলক বিষয় ফুটে উঠেছে৷ ধারণা করা হয়, কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে এটাই প্রথম চলচ্চিত্র৷
উৎসবের জন্য প্রকাশ
রেট্রোস্পেক্টিভ বিভাগে এবার ১৯৩২ সালের চলচ্চিত্র ‘দ্য অ্যানসিয়েন্ট ল’ বিশেষ সম্মান পেয়েছে৷ এবারের উৎসবে এটির নতুন সংস্করণ প্রদর্শিত হয়েছে৷
এখনও সজীব এবং নতুন
ভাইমার সিনেমা জার্মান চলচ্চিত্রের সবচেয়ে ফলপ্রসূ ও প্রভাবশালী সময়কে উপস্থাপন করে বলে মনে করা হয়৷