৬ বছর পর ঘরে ফিরলেন মালালা
২৯ মার্চ ২০১৮গত ছয় বছর তাঁকে অনেক কিছু দিয়েছে৷ নোবেল শান্তি পুরস্কার, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ, বেস্ট সেলার বই, তাঁর জীবন নিয়ে ডকুমেন্টারি– এমন আরো অনেক কিছু৷ জাতিসংঘে বক্তৃতা করেছেন তিনি৷ বহু দেশ তাঁকে সাম্মানিক নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছে৷ কিন্তু মালালা ইউসুফজাই খুশি হতে পারছিলেন না৷ বহু সাক্ষাৎকারেই তিনি বারংবার একটিই আক্ষেপ করছিলেন– দেশে ফিরতে চান৷ অবশেষে তা সম্ভব হলো৷ ছয় বছর পর নিজের দেশ পাকিস্তানে ফিরলেন মালালা৷ মালালা তো বটেই, খুশি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষরাও খুশি৷
পাকিস্তানের প্রশাসন সূত্রের খবর, দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মালালা৷ এছাড়াও বেশ কিছু অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা৷ তবে নিরাপত্তার কারণে সেসব এখনই জানাতে চাইছে না পাকিস্তান প্রশাসন৷ ছ'বছর পর দেশে ফিরে তাঁকে যাতে কোনো রকম সমস্যার মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে পাক প্রশাসন৷
দেশ ছাড়ার সময়টা খুব ভালো ছিল না৷ পাকিস্তানের সোয়াট প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে মালালা৷ খুব ছোট বয়স থেকেই তিনি সাহসী এবং লড়াকু৷ মেয়েদের পড়াশোনার সুযোগ নিয়ে মাত্র নয় বছর বয়সে মুখ খুলেছিলেন তিনি৷ এর কিছুদিন পর বিবিসি উর্দুর জন্য একটি ব্লগ লিখতে শুরু করেন৷ সেখানে তিনি লেখেন, তালেবান অধ্যুষিত এলাকায় মেয়েদের পড়াশোনা করা ঠিক কতটা কঠিন৷ এছাড়া তাঁর সমাজ নিয়েও বহু সমালোচনামূলক কথা লিখেছিলেন মালালা৷ এর কিছুদিন পরেই স্কুল থেকে ফেরার সময় স্কুল বাসে উঠে পড়ে সশস্ত্র জঙ্গিরা৷ মালালাকে লক্ষ করে একের পর এক গুলি করে তারা৷ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করতে করতে কার্যত কোমায় চলে যাওয়া মালালাকে নিয়ে যাওয়া হয় ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে৷ বহুদিনের চেষ্টায় আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি৷ পরবর্তীকালেও মেয়েদের পড়াশোনার জন্য লড়াই তিনি চালিয়ে গেছেন৷ স্বীকৃতিও পেয়েছেন৷
পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষ মালালার দেশে ফেরা নিয়ে উৎসাহী হলেও একদল এখনো সমালোচনা করে যাচ্ছেন৷ পাকিস্তানের বিশিষ্ট সাংবাদিক হুমা ইউসুফ লিখেছেন, একশ্রেণির লোকের মালালার বিরুদ্ধে দু'টি অভিযোগ৷ এক, তাঁর বিখ্যাত হয়ে ওঠার কারণ পাকিস্তানের সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনাটিকে ঘিরে৷ ফলে দেশের নাম আসলে উজ্জ্বল নয়, কালিমালিপ্ত করছেন মালালা৷ এবং দুই, মালালা পশ্চিমি অপসংস্কৃতিকে পাকিস্তানে ঢোকাতে চাইছেন৷ যদিও হুমা লিখেছেন, পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষই মালালাকে ভালোবাসেন৷ তাঁরা চান মালালা দেশের মুখ আরো উজ্জ্বল করুন৷
এসজি/এসিবি (রয়টার্স)