৩৪ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার
৮ আগস্ট ২০২৪সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে আসা অন্যান্য শরণার্থীরা সেখানকার ভয়াবহ দৃশ্য বর্ণনা করছিলেন৷ তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছে৷
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) নৌকাডুবির পর প্রাথমিকভাবে ছোট শিশু সহ ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ কিন্তু তারপর আরও অনেক মৃতদেহ তীরে ভেসে আসতে দেখা যায়৷ সর্বশেষ তথ্য অনুসারে মৃতের সংখ্যা ৩৪ বলে জানা গেছে৷
পুলিশ জানিয়েছে, শরণার্থীদের এই দলটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় তাদের ছোট নৌকাটি বাংলাদেশের শাহপরীর দ্বীপের কাছাকাছি নাফ নদীতে ডুবে যায়৷ বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্ত শহরের সরকারি কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, নৌকাটি মায়ানমার থেকে আসা মুসলিম রোহিঙ্গাদের বহন করছিল৷
স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুস সলাম জানান, মৃতদেহগুলো দাফন করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গারা তাদের জীবন নিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসছিল৷ গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷''
২০২৩ সালের নভেম্বরে আরাকান আর্মি (এএ) জান্তা বাহিনীকে আক্রমণ করার পর থেকে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে৷ বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, যাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালে সামরিক অভিযানের পর রাখাইন থেকে পালিয়ে এসেছিল৷ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি বর্তমানে জাতিসংঘের আদালতে বিচারাধীন রয়েছ৷
বুধবার (৭ আগস্ট) রাখাইন শহর মুংডাও থেকে ৩৫ বছর বয়সী শরণার্থী আব্দুল কালাম ভিন্ন একটি নৌকায় বাংলাদেশে আসেন৷ তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ পালানোর চেষ্টা করছে৷ আব্দুল কালাম বলেন, ‘‘আরাকান সেনাবাহিনী আমাদের হত্যা করছে৷ তারা আমাদেরকে রাখাইন থেকে বের করে দিতে চায়৷ অনেক রক্ত দেখেছি৷ তারা রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে৷''
আদনান চৌধুরী বলেন, সোমবার (৫ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে মৃতদেহ উদ্ধার করতে দেরি হয়৷ আদনান চৌধুরী এফপিকে জানান, ‘‘আমরা আমাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দুর্ঘটনাস্থলে পাঠাতে পারিনি৷ কারণ তারা রাজনৈতিক সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ছিল৷''
এসএইচ/জেডএইচ (রয়টার্স)