উগ্র ডানপন্থি কর্মকর্তার অপসারণ কিসের ইঙ্গিত?
১৯ আগস্ট ২০১৭বরখাস্ত হওয়ার পর ফের কট্টর ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্টের শীর্ষ পদে ফিরেছেন স্টিভেন ব্যানন৷ ব্রেইটবার্ট নিশ্চিত করেছে তাদের নির্বাহী চেয়ারম্যন পদে যোগ দিচ্ছেন ব্যানন৷ শুক্রবার ট্রাম্প ব্যাননকে হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পদ থেকে সরিয়ে দেন৷ ব্যানন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বলে অভিযোগ ছিল সমালোচকদের৷
আগস্টের ৭ তারিখেই ব্যানন ট্রাম্পের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানা যায়৷ কিন্তু শার্লটসভিল শহরে কু-ক্লাক্স-ক্ল্যান, নব্য নাৎসি ও শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্যবাদী ‘হোয়াইট সুপ্রিম্যাসি' গোষ্ঠীগুলির হিংস্র তাণ্ডবের ঘটনায় তিনি পদত্যাগ করতে দেরি করে ফেলেন বলে জানিয়েছেন ব্যানন৷
বিরোধীদের শায়েস্তা
বরখাস্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যানন ব্লুমবার্গ নিউজকে জানান, ট্রাম্পের বিরোধীদের সঙ্গে লড়তে গিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ অন্যদিকে, ব্যানন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে যে লড়াই চালিয়েছিলাম আমরা, সেটা শেষ হয়েছে৷ আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে, তবে ট্রাম্পের সাথে কাজ করার ব্যাপারটা চুকে গেছে৷'' তবে তিনি এটাও বলেন যে, বিরোধীদের শায়েস্তা করবেন তিনি৷
নতুন করে ব্রেইটবার্টে ফিরে ব্যানন হোয়াইট হাউজের ভেতরে যাঁরা তাঁর পরামর্শমতো তীব্র জাতীয়তাবাদী নীতি বাস্তবায়নে বাধা দিয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে সরব হতে পারেন বলেও ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা৷ এ তালিকায় রিপাবলিকান এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও থাকতে পারেন৷
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ হাক্যাবি স্যান্ডার্স শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, ‘‘হোয়াইট হাউজের চিফ অফ স্টাফ জন কেলি ও স্টিভ ব্যানন একমত হয়েছেন যে, শুক্রবারই হবে স্টিভের শেষ কর্মদিবস৷ তিনি এতদিন পালন করেছেন যে দায়িত্ব সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ৷ আমরা তাঁর মঙ্গল কামনা করছি৷''
জন কেলির আগমনই বি ব্যাননের বরখাস্তের কারণ?
জুলাইতে হোয়াইট হাউজে সাবেক মার্কিন মেরিন জেনারেল জন কেলি চিফ অফ স্টাফ হিসেবে যোগদানের পরই ঘটল এই উইকেট পতন৷ কেননা কেলি তাঁর কৌশল খাটিয়ে হোয়াইট হাউজের কর্মীদের আরও দক্ষভাবে কাজ করানোর চেষ্টা করছিলেন৷ আগস্টের প্রথম দিকে কেলি ট্রাম্পের নিউজার্সির গল্ফ ক্লাবে এক সপ্তাহ কাটান৷ সেসময় প্রেসিডেন্টের মেয়ের জামাই জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে বিভিন্ন পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন বলে গণমাধ্যমে জানা গেছে৷ ঐ সময় ব্যানন কিন্তু ওয়াশিংটনেই ছিলেন৷
ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব
ট্রাম্পকে নির্বাচনে জেতানোর পেছনে তাঁর কৃতিত্ব রয়েছে এটা জানান দিয়ে জনগণের মনোযোগ কাড়তে চেয়েছিলেন ব্যানন - এমনটাই অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে৷ এমনকি হোয়াইট হাউজের অনেক কর্মকর্তার গোপন তথ্য গণমাধ্যমে ফাঁস করে দেয়ার অভিযোগও আছে৷ ট্রাম্পের ট্রাভেল ব্যান বা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসার পেছনে ব্যানন সবচেয়ে বেশি প্রভাব খাটিয়েছিলেন বলে জানা যায়৷
হোয়াইট হাউজে অন্য উপদেষ্টা এবং কংগ্রেসের শীর্ষ রিপাবলিকান নেতাদের সঙ্গে লড়াইয়ের পুরো সময়েও ব্রেইটবার্ট ব্যাননকে সাহচর্য দিয়ে গেছে৷ ট্রাম্পের কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সংবাদমাধ্যমটি ধারাবাহিকভাবে সেনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের নেতা মিচ ম্যাককনেল ও নিম্নকক্ষের স্পিকার পল রায়ানের মতো প্রতিষ্ঠিত অনেক রিপাবলিকান নেতার সমালোচনা করেছে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)