হেরোইনের ছোবলে হুমকির মুখে রাশিয়ার জনশক্তি
২৪ এপ্রিল ২০১১রাশিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জনশক্তির উপর কালো থাবা বসিয়েছে হেরোইনের নেশা৷ ক্রমান্বয়ে আরো ভয়ংকর রূপ নিয়ে জাতীয় হুমকিতে পরিণত হচ্ছে হেরোইনের ছোবল৷ তদুপরি সামাজিক কুসংস্কার ও প্রতিবন্ধকতার কারণে হেরোইনের থাবা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতেও পারছে না হেরোইন আসক্ত মানুষ৷ সম্প্রতি মাদকাসক্ত ছেলে-মেয়েদের মায়েদের এক বৈঠকে দেশটির প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এমনভাবেই স্বীকার করেছেন সেখানকার নির্মম বাস্তবতা৷
বিশ্বে শীর্ষ হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান৷ দেশটির সাথে দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে রাশিয়ার৷ এই সীমান্ত এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ দুর্বল হওয়ায় বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে প্রতিনিয়ত প্রতিবেশী দেশে হেরোইন পাচার হচ্ছে৷ ফলে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হেরোইন সেবনের দেশে পরিণত হয়েছে রাশিয়া৷ সরকারি সূত্রের হিসাব তুলে ধরে ঐ বৈঠকে মেদভেদেভ বলেন, তাঁর দেশের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত৷
নেশাগ্রস্ততার সাথে জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আনুপাতিক সম্পর্ক তুলে ধরেন প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ৷ তিনি জানান, মাদকের কারণে দুই থেকে তিন শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়ছে রাশিয়ার জিডিপি৷ জাতীয় স্বাস্থ্য সূচকের উপর মাদকের নেতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এই মাদক, যা পুরো জাতির পুষ্টি ভাণ্ডারকে ধ্বংস করে দেয়৷ এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, রাশিয়ায় হেরোইনের প্রকোপ এইচআইভি'র সংক্রমণকেও বাড়িয়ে দিয়েছে৷
একইসাথে রয়েছে অধিকহারে ধূমপান, মদ্যপান, দূষণ এবং দারিদ্র্য, যা সোভিয়েত আমলের পতনের পর সবচেয়ে নিচে নামিয়ে দিয়েছে সেখানকার জন্মহার৷ জাতিসংঘের আশঙ্কা, ২০৫০ সাল নাগাদ রাশিয়ার জনসংখ্যা সাড়ে চৌদ্দ কোটি থেকে কমে সাড়ে এগারো কোটিতে পৌঁছবে৷ মাদক সেবনের বিরুদ্ধে সোচ্চার মায়েদের সংস্থার প্রধান ভ্যালেন্টিনা চেরভিচেনকোর মতে, ‘‘এ যেন এক গণহত্যা৷ ধ্বংসের মুখে গোটা জাতি৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক