1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হৃদয় মণ্ডলের গোটা ব্যাপারটাই সাজানো: ড. সলিমুল্লাহ খান

৮ এপ্রিল ২০২২

মুন্সীগঞ্জের একটি স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের ক্লাসে দেয়া বক্তব্য নিয়ে যে তোলপাড়, তার পুরোটাই সাজানো বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ড. সলিমুল্লাহ খান৷ এর মধ্যে ধর্ম অবমাননার ব্যাপার ছিল না বলেও মনে করেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/49glm
Sendung Khaled Muhiuddin Asks 102

টক শো ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' এবারের পর্বে আলোচনার বিষয় ছিল ‘বিজ্ঞানের শিক্ষা ও ধর্মের টিপ'৷ সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘‘শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে কথোপকথন যা প্রকাশ হয়েছে, তাতে ধর্মের অবমাননা হয়, এমন কিছু দেখিনি৷'' এক্ষেত্রে ‘কি বলেছেন' জানার পাশাপাশি ‘বলার উদ্দেশ্য কী' এ ব্যাপারেও আলোচনা করার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন তিনি৷

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘‘তিনি যা বলেছেন সেটার মধ্যে ধর্ম নিয়ে আলোচনা আছে, অবমাননা নেই৷ সব আলোচনাই যদি অবমাননা হয়, তাহলে তো আলোচনাই করা যাবে না৷'' ধর্ম নিয়ে যুক্তিশীল আলোচনা ধর্মের অবমাননা হবে কিনা, সেটাও ভেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি৷ এক্ষেত্রে গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের উদাহরণ তুলে ধরেন৷ ‘‘সক্রেটিসের বিরুদ্ধেও একসময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছিল৷ কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে, উনি ধর্মের কোনো অবমাননা করেননি৷ উনি মানুষের সত্য অনুসন্ধানের পথ হিসাবে যুক্তিশীলতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন৷''

এদিকে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার এক অমুসলিম শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ‘হিজাব না পরায় বেত্রাঘাত' করার অভিযোগ ওঠে৷ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে৷ পরবর্তীতে কিছু সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয় যে ওই ঘটনায় দুজন শিক্ষক জড়িত ছিলেন, যাদের একজন মুসলিম৷ তাছাড়া, ঘটনাটির সঙ্গে হিজাব পরার কোনো সম্পর্ক নেই, বরং স্কুল ড্রেস না পরে আসায় বেত্রাঘাত করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ছাড়াও বেশ কয়েকজন ছাত্রও ছিলেন৷

এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে টক শোতে৷ আলোচক বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে এবং রাষ্ট্রে গভীর অসুখ হয়েছে এখন৷ সমাজে যখন অন্য অনেক অসুখ আসে যা প্রকাশের পথ খুঁজে পায় না, তখন তা নানা আলামত বা লক্ষণ আকারে প্রকাশ পায়৷'' তিনি বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে এমন বাড়াবাড়ি ছেলেভুলানো খেলার মতো৷'' আসল সমস্যাকে চাপা দেয়ার জন্যই এই সমস্যাকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি৷

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশ শুধু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ নয়, ৯০ ভাগ গরীবেরও দেশ, শতকরা ৫০ জন নারীরও দেশ৷ সেটা তো কেউ বলছে না৷ কোন তথ্যকে আপনি শুরুতে নিয়ে আসবেন, গুরুত্ব দিয়ে বলবেন সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷’’

আলোচনার এক পর্যায়ে নোবেল পুরস্কারের উদাহরণ তুলে ধরেন সলিমুল্লাহ খান৷ তিনি বলেন, ‘‘অন্য সব নোবেল নিজেদের নামে হলেও অর্থনীতির নোবেল পুরস্কারে ইকোনমিক সায়েন্স কেন? এখন ইকোনমিক্সকে বিজ্ঞান বানানোর এই উদ্বেগ কেন? কারণ ইকোনমিক্স এখনও বিজ্ঞান হয়ে ওঠেনি৷ এখন যে আইডিওলজির মানুষদের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়, তাদের বেশিরভাগই সেই গ্লোবালাইজেশনের শিকার৷ আমি মনে করি অর্থনীতিকে বিজ্ঞান বানানোর যে আকুতি, সেটি ধর্মকে বিজ্ঞান বানানোর আকুতির সঙ্গে তুলনীয়৷''

এডিকে/এআই