হুমকির খেলায় মেতেছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
২৩ জুলাই ২০১৮এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের কারণে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির কার্যকারিতা কতটুকু থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ ২০১৫ সালের চুক্তিটিতে বাকি পাঁচ দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন থাকতে চাইলেও নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷
তারওপর তাদের এই সরে যাওয়ায় ইরানের অর্থনীতি আবারো সংকটের মুখে পড়েছে৷ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক ইরানে বিনিয়েোগ করা থেকে সরে গেছে৷ কারণ, ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের৷ এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চরম বিরক্ত ইরান সরকার৷
প্রেসিডেন্ট রুহানির কণ্ঠেও তাই প্রচণ্ড বিরক্তি৷ রোববার তাই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি৷
‘‘আমরা এই প্রণালীর নিরাপত্তা সর্বদাই নিশ্চিত করেছি৷ সিংহের লেজ নিয়ে খেলবেন না৷ তাহলে আজীবন পস্তাতে হবে৷'' বলেন তিনি৷
যুগ যুগ ধরে হরমুজ প্রণালী আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেল পরিবহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট৷ পারস্য উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে সংযোগ ঘটিয়ে তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ স্থাপন করে এটি৷
রুহানির অভিযোগ, যখনই ইউরোপের সঙ্গে কোনো চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা জাগে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে ঝামেলা পাকায়৷ তাই তাঁর প্রচ্ছন্ন হুমকি, ‘‘অ্যামেরিকার জানা উচিত যে, সব শান্তির ওপরে ইরানের সঙ্গে শান্তি৷ আবার সব যুদ্ধের ওপরে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ৷''
এদিকে, এই হুমকি শুনেই ক্ষেপে গিয়েছেন ট্রাম্প৷ বরাবরের মতোই এক টুইট বার্তায় উত্তর দিয়েছেন তিনি৷ লিখেছেন, ‘‘আর কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয়ার ভুল করবেন না৷ ইতিহাসে অনেকেরই পরিণতি ভালো হয়নি৷ আপনারও হবে না৷''
তাঁর এই টুইটের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ এই টুইটকে রুহানির বক্তব্যের ‘পরোক্ষ প্রতিক্রিয়া' বলে অভিহিত করেছে৷
এমনকি ইরানের বাসিজ মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান বলেছেন যে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য একটি ‘মনস্তাত্বিক যুদ্ধ'৷ স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তাঁর প্রতিক্রিয়াটি ছিল এমন, ‘‘ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিবৃতি একটি মনস্তাত্বিক যুদ্ধ৷ ইরানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবার অবস্থায় নেই তিনি৷''
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘কঠিন অবস্থান'-এর প্রশংসা করেছেন৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি, রয়াটার্স, এপি)