1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘরে থেকেও চিকিৎসা সম্ভব

২৫ জুলাই ২০১৯

বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট৷ দুই তৃতীয়াংশ রোগীকেই হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ চিকিৎসকরা বলছেন, অবস্থা জটিল না হলে হাসপাতালে ভর্তির দরকার নেই, বাসায় রেখেই চিকিৎসা সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/3Minn
Bangladesch Dhaka Medical College Hospital
ছবি: DW/H. Ur Radhid

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসেবে জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত ৯ হাজার দুইশ ৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে৷ গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন পাঁচশো ৪৭ জন৷ জুলাই মাসের ২৪ দিনেই ভর্তি হয়েছেন সাত হাজার একশ ১২ জন৷ তারা আট জনের মৃত্যুর কথা বলছেন, যদিও বেসরকারি হিসেবে ৩২ জন৷
২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসবে ওই বছর  ডেঙ্গুতে মারা যান ৯৩ জন৷ পরের বছর ৪৪ জন৷ ২০০২ সালে ৫৮ জন৷ এরপর মৃতের সংখ্যা কমে আসলেও গত বছর মারা যায় ২৪ জন৷
বাংলাদেশের হাসপতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড বা বেড নেই৷ তাদের মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগী হিসেবেই ভর্তি করা হয়৷
২০১৮ সালের হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক বাদে বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মোট হাপতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা সাত হাজার ৩১২টি৷ এরমধ্যে সরকারি হাসপাতাল দুই হাজার ২৫৮ টি৷ বেসরকারি পাঁচ হাজার ৫৪টি৷ সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে হাসপাতালে বেডের সংখ্যা এক লাখ ৪৩ হজার ৩৯৪টি৷বাংলাদেশে এক হাজার ৫৮৫ জনের জন্য একজন রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক আছেন৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক(হাসপাতার) ডা. আমিনুল হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘ সাধারণভাবে মেডিসিনের জেনারেল প্রাকটিশনারাই ডেঙ্গুর চিকিৎসা করতে পারেন৷ ক্রিটিক্যাল হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হয়৷ আমরা ডেঙ্গু চিকৎসার জন্য ন্যাশনাল গাইডলাইন করেছি৷ প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে৷''
তিনি জানান, ‘‘চিকিৎসকদের অধিকাংশই মেডিসিনের৷ হাসপাতালগুলোতে বেডের চারভাগের একভাগ মেডিসিনের৷ তবে মেডিসিনের বেডে ডেঙ্গু ছাড়াও মেডিসিনের অন্যান্য রোগীরা ভর্তি হন৷ শিশু ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের রাখা হয়৷''
সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ায় অধিকাংশ ডেঙ্গু আক্রান্তকে আউটডোর থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মোট বেডের সংখ্যা দুই হাজার ৬০০৷ এর মধ্যে মেডিসিন ও শিশু মিলিয়ে বেড আছে ৮০৮টি৷ এইসব বেডেই ডেঙ্গু আক্রান্ত নারী, পুরুষ ও শিশুদের রাখা হচ্ছে এপর্যন্ত এই হাসপাতালে এক হাজার ৩২১ জন  ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন৷  হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেডের দ্বিগুন৷ ফলে তাদের ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে৷ আর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে চাপ আরো বেড়েছে৷

রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল না হলে ভর্তিই করছিনা:এ কে এম নাসির উদ্দিন

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘ আমরা দুই তৃতীয়াংশ রোগীকেই আউডোর থেকে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছি৷ অবস্থা ক্রিটিক্যাল না হলে আমরা ভর্তিই করছি না৷''

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘ডেঙ্গু হলেই হাসপাতালে ভর্তি হবে এমন নয়৷ বাসায়ও চিকিৎসা চলতে পারে৷ তবে এখন যোকোনো মাত্রার জ্বর হলেই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে৷ পরামর্শ নিতে হবে৷ তবে প্লাটিলেট এক লাখের কম হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হবে৷''

প্যারাসিটামল ছাড়া আর কোনো ওষুধ খাওয়া যাবেনা: এবিএম আবদুল্লাহ

তিনি বলেন,‘‘বাসায় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে৷ প্যারাসিটামল ছাড়া আর কোনো ওষুধ খাওয়া যাবেনা৷ প্রচুর পানি ও পানীয় খাবার খেতে হবে৷ স্বাভাবিক সব খাবারও খেতে পারবেন৷ চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে৷ তিনি যেসব পরীক্ষার কথা বলেন তা করাতে হবে৷''
তার মতে, ‘‘বাসায় চিকিৎসা চলাকালে তার পরিবারে সদস্যরা তাকে সহয়তা করতে পারেন৷ বিশেষ করে তার খাবার ও চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত পরামর্শের ব্যাপারে৷ আর বাসায় বা বাড়ির আঙিনায় যাতে কোনোভাবে পানি জসে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷ রাতে এমনকি দিনেও প্রয়োজনে মশারী ব্যবহার করতে হবে৷ এটা ভাইরাস জ্বর, ডেঙ্গু মশা এই ভাইরাস ছাড়ায়৷ তাই ডেঙ্গু মশা যাতে কামড়াতে না পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘এটা ছোঁয়াচে নয়৷ একসাথে খেলে, ঘুমালে বা মেলামেশা করলে ডেঙ্গু একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়ায় না৷''