শরণার্থীদের বহিষ্কারের দাবি!
৩১ জুলাই ২০১৭শুক্রবার দুপুরে হামবুর্গ শহরে এক সুপারমার্কেটে এক আততায়ী নির্বিচারে আশেপাশের মানুষের উপর ছুরি হামলা চালিয়েছে৷ সম্ভবত সেখানেই সে ছুরিটি চুরি করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হামলা চালিয়েছে৷ তার ছুরির আঘাতে এক ব্যক্তি নিহত ও সাতজন আহত হয়েছে৷ পুলিশ তাকে আটক করেছে৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতে জন্মগ্রহণ করা ফিলিস্তিনি ব্যক্তি ২০১৫ সালে শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে এসেছিল৷ তার আগে সে নরওয়ে, সুইডেন ও স্পেনে গিয়েছিল বলে জানা গেছে৷ ২৬ বছর বয়সি আততায়ী যে উগ্র ইসলামি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তা অজানা ছিল না৷ কিন্তু সেই ব্যক্তিকে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করার কোনো কারণ দেখেন নি কর্মকর্তারা৷ আততায়ীর উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট নিয়ে পুলিশ এখনো তদন্ত চালাচ্ছে৷ তার মানসিক সমস্যা ছিল, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে৷
জার্মানিতে কোনো হামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী জড়িত থাকলে সেই অপরাধকে ঘিরে বাড়তি আগ্রহের সৃষ্টি হয়৷ বিশেষ করে সেই আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন খারিজ হওয়ার পরেও তাকে কেন জার্মানি থেকে বহিষ্কার করা হয়নি বা যায়নি, এই প্রশ্ন বার বার উঠতে থাকে৷ গত বছর ডিসেম্বর মাসে বার্লিনে সন্ত্রাসী হামলার পর এমন আশ্রয়পার্থীদের প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে৷ তবে হামবুর্গ শহরে সপ্তাহান্তে হামলার পর বিষয়টি নিয়ে আবার বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷
হামবুর্গের কর্তৃপক্ষ এমন মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারতো কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ নগর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে, যে কর্তৃপক্ষ আততায়ী সম্পর্কে সব তথ্য ঠিকমতো বিশ্লেষণ করে বিপদের আশঙ্কার সঠিক মূল্যায়ন করেছিল কিনা৷ রক্ষণশীল মহলের রাজনীতিকদের মতে, কট্টর ইসলামপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হবার পর এমন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের অবাধ বিচরণ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত৷ তাছাড়া যে সব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে না, তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো উচিত৷ তাছাড়া জার্মানির ফেডারেল কাঠামোর কারণে যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে, তার ফলেও এমন আশ্রয়প্রার্থীদের স্বদেশে ফেরাতে সমস্যা দেখা দেয় বলে সমালোচকরা মনে করছেন৷ এই দায়িত্ব পুরোপুরি ফেডারেল সরকারের হাতে তুলে দেবার জন্যও চাপ বাড়ছে৷ তবে প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত বর্তমান নীতির ফলে অনেক আশ্রয়প্রার্থীর জীবন বিপন্ন হয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ উঠছে৷
শনিবারই জার্মানিতে নতুন এক আইন কার্যকর করা হয়েছে, যার আওতায় আবেদন নাকচ হলে ‘বিপজ্জনক' হিসেবে চিহ্নিত আশ্রয়প্রার্থীদের অনেক সহজে আটক রাখা সম্ভব হবে অথবা তাদের উপর নজরদারি চালানো যাবে৷ তাছাড়া তাদের পায়ে ইলেকট্রনিক বেড়ি পরিয়ে রাখা যাবে, যাতে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা সম্ভব হবে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)