হামবুর্গে মুখ থুবড়ে পড়ল ম্যার্কেল, এএফডি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০জাতীয় রাজনীতির গতিপ্রকৃতি যে আঞ্চলিক নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে, তার পরিচয় আবার পাওয়া গেল জার্মানির হামবুর্গ নগর রাজ্যে৷ রবিবার সেই নির্বাচনে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের ভরাডুবি হয়েছে৷ গত পাঁচ বছর বিরোধী আসনে থাকা সত্ত্বেও দলটি ক্ষমতাসীন সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও সবুজ দলের জোটকে হারাতে পারেনি৷ ম্যার্কেলের উত্তরসূরি বাছাই নিয়ে সিডিইউ দলে যে সংকট চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে ভোটাররা রক্ষণশীল এই দলের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
সম্প্রতি জার্মানির হানাউ শহরে চরম দক্ষিণপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ আততায়ীর হামলাও সম্ভবত ভোটারদের মনে প্রভাব ফেলছে৷ প্রতিবাদী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও এএফডি বা ‘জার্মানির জন্য বিকল্প’ দল যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদেশি-বিদ্বেষী, বর্ণবাদী সংবিধান-বিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে, অনেকের মনেই সেই উপলব্ধি হচ্ছে৷ হামবুর্গের নির্বাচনের আগেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্ভাব্য এএফডি-ভোটারদের উদ্দেশ্যে বার বার এক সতর্কবাণী শোনা যাচ্ছিল৷ হানাউ-এর ঘটনার পরেও বিবেকদংশন ছাড়া এই দলকে ভোট দেওয়া উচিত কিনা, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে৷ হামবুর্গের নির্বাচনে এএফডি দলের খারাপ ফলের পেছনে সেই প্রচার অভিযান যে কিছুটা হলেও প্রভাব রেখেছে, সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের আচরণে তার প্রতিফলন দেখা গেছে৷ দলের মধ্যেও আদর্শগত অবস্থান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
অন্যদিকে হামবুর্গের নির্বাচনে সমর্থন প্রায় দ্বিগুণ করতে পেরেছে সবুজ দল৷ প্রান্তিক, পরিবেশবাদী দল থেকে মূল স্রোতের মধ্যপন্থি শক্তিতে পরিণত হচ্ছে এই দলটি৷ একের পর এক নির্বাচনে সবুজ দলের সাফল্য দুই বড় দলের ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে৷ সিডিইউ ও এসপিডি দলের বর্তমান সংকটের ফলে শূন্যতার অনেকটাই ভরাট করছে সবুজ দল৷
বহুকাল পরে জার্মানির কোনো নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল৷ গতবারের তুলনায় সমর্থন হারালেও শাসক মেয়র হিসেবে নিজের দলের জয় অক্ষত রাখতে পেরেছেন পেটার চেনচার৷
হামবুর্গের আঞ্চলিক নির্বাচনের প্রভাব জার্মানির বাকি রাজ্যের ভোটারদের উপর কতটা প্রভাব রাখবে, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে৷ বিশেষ করে ‘প্রতিবাদী’ ভোটাররা আগের মতই এএফডি দলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে যাবেন কিনা, সে দিকে পর্যবেক্ষকদের নজর থাকবে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)