হাঙ্গেরির কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য দানিয়ুব দূষছে
৭ অক্টোবর ২০১০প্রথমে সেটি দানিয়ুবের এর শাখা নদী মোসোনির জলে মিশেছে৷ আর এর কারণে পুরো দানিয়ুবের জলই এখন এক ভয়াবহ দূষণের মুখে৷ উল্লেখ্য, হাঙ্গেরির অ্যালুমিনিয়াম কারখানার এই বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে এর আগে ৪ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছিলেন৷
গত সোমবার কারখানাটির বর্জ্য সংরক্ষণের যে বিশাল আধারটি ছিল, সেটির দেয়াল ভেঙে পড়লে আশেপাশের গ্রাম ভেসে গিয়ে শতাধিক মানুষ আহত এবং চার জন নিহত হন৷ মৃত চার জনের তিনজন বয়স্ক, এবং একজন শিশু৷ এছাড়াও আরো তিন ব্যক্তির কোন সন্ধান এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায় নি বলেই জানা গেছে৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা রীতিমতো হতবাকই হয়ে পড়েছিলেন কারখানার দেয়াল ভেঙে সৃষ্ট এই বর্জ্য-প্লাবনের তীব্রতা দেখে৷ তাদের একজন জানিয়েছেন, ‘‘হঠাৎ বাঁধভাঙা জোয়ারের তীব্রতায় গ্যারাজগুলো থেকে গাড়িগুলো যেন ছিটকে বেরিয়ে গেলো, দরজা, জানালা ভেঙে চুরে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেলো এই বর্জ্যের প্লাবন৷''
জানা গেছে, হাঙ্গেরির অ্যালুমিনিয়াম কারখানার এই বিষাক্ত লাল কাদা রাবা নদীতে প্রবাহিত হয়ে দানিয়ুবে মেশা শুরু করেছে স্থানীয় সময় সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটের দিকে৷ বুদাপেস্টের ডিজাস্টার রিলিফ সার্ভিসের স্থানীয় প্রধান টিবর ডবসন জানিয়েছেন, ‘‘আজ সকালে এই বিষাক্ত বর্জ্য নদীবাহিত হয়ে দানিয়ুবে পৌঁছেছে৷ ইতোমধ্যেই এই বর্জ্য দানিয়ুবের একটি শাখা নদী মোসোনিকে দূষিত করেছে৷ মোসোনি থেকে দানিয়ুবের প্রধান অংশের দূরত্ব ৬ কিলোমিটার৷''
এদিকে জোসেফ টথ নামের এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এর আগে রাবা নদী এবং দানিয়ুবের পানির অ্যালক্যালাইনিটি পরীক্ষা করে তারা দেখেছেন, পানিতে স্বাভাবিক মাত্রার চাইতে তা একটু বেশিই রয়েছে৷ আর পিএইচ এর মাত্রাটি স্বাভাবিক আট মাত্রার চাইতে বেড়ে নয় এ উঠেছিল৷ বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং পানি দূষণের দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন৷ আজ সকালের পর্যবেক্ষণের হিসেব, দানিয়ুবের পানিতে পিএইচ এর মাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৩ এ৷
উল্লেখ্য, এই বিষাক্ত লাল কাদা যা এতো দুর্ঘটনা আর আতংকের জন্ম দিয়েছে তা আসলে অ্যালুমিনিয়াম কারখানার বর্জ্য হিসেবেই আধারটিতে রাখা হতো৷ এটি ভয়াবহ ধরণের বিষাক্ত৷ কারণ এই বর্জ্যে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামের মত মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপাদান আর ভারী ধাতু রয়েছে৷ যা সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটাতে পারে৷
প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন