হাইতিতে কাজ করতে আগ্রহী আইসিডিডিআরবি
২৪ অক্টোবর ২০১০পরিস্থিতির অবনতি
দুইদিন আগে থেকেই রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সের আশেপাশের এলাকাতে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ে৷ তবে শনিবার থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সেও৷ জাতিসংঘের স্বাস্থ্য কর্মকতাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে গোটা হাইতিতে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ২২০ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে৷ তবে রাজধানীতে কতজন মারা গেছে কিংবা সংক্রমিত হয়েছে সেই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি৷ এদিকে ক্যানাডার সরকার জানিয়েছে যে তারা হাইতিতে একটি সামরিক হাসপাতাল বসাবে৷ এক মিলিয়ন ডলার সহায়তাও দিচ্ছে তারা৷ যুক্তরাষ্ট্রও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ অন্যদিকে কলেরা ঠেকাতে ডক্টর উইদাউট বর্ডার্স একটি অস্থায়ী হাসপাতাল খোলার ঘোষণা দিয়েছে৷
সাধারণ মানুষের অবস্থা
গত জানুয়ারি মাসে হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল৷ সেই ভূমিকম্পের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি দেশটি৷ রাজধানীর অনেক লোক এখনও তাবুতে বসবাস করছে৷ বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট রয়ে গেছে দেশটিতে৷ এর বাইরে প্রয়োজনীয় চিকিৎসারও ব্যবস্থা নেই অনেক হাসপাতালে৷ এসব কারণে কলেরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
আইসিডিডিআরবির আগ্রহ
কলেরা নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ বা আইসিডিডিআরবি নজর রাখছে হাইতির পরিস্থিতির ওপর৷ আইসিডিডিআরবির লংগার স্টে ইউনিটের প্রধান ড. মো. শাহাদাত হোসাইন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, যে তারা হাইতির বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে কাজ করতে আগ্রহী৷ হাইতির পরিস্থিতি তাদের নজরে রয়েছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে ড. শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘‘ আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের যখন কোন জায়গা থেকে ডাকা হয় তখন আমরা তাতে সাড়া দেই৷ যেমন অনেক আগে আমরা রুয়ান্ডার গোমায় গিয়েছিলাম৷ যুদ্ধ বিধ্বস্ত রুয়ান্ডার কলেরা পরিস্থিতিতে আমরা কাজ করেছি৷ এরপর জিম্বাবোয়েতেও আমাদের একটি দল গিয়েছিল৷ সেখানেও এই ধরণের কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল৷ এরপর কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের বন্যার সময়ও আইসিডিডিআরবি থেকে দল গিয়ে তাদের সাহায্য করেছিল৷ এসব কাজ যেহেতু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাই আন্তর্জাতিক কোন সংস্থা কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার আমাদের অনুরোধ করলে আমরা সেখানে গিয়ে কাজ করি৷ এক্ষেত্রে আমরা সবসময় সাহায্য করি৷’’
দূষিত পানি থেকে কলেরা
কলেরা ছড়িয়ে পড়ছে কেন? এই প্রশ্ন করেছিলাম ড. মো. শাহাদাত হোসাইনকে৷ জবাবে তিনি জানান, ‘‘কলেরা একটি পানিবাহিত রোগ৷ তাই যে কোন কারণেই হোক ব্যবহৃত পানিতে কলেরা থাকলে তা পান করা হলে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে৷ সাধারণত দেখা যায় যেখানে পানির সুষ্ঠু বন্টনের ব্যবস্থা থাকে না, কিংবা মানুষ যেখানে সেখানে থেকে পানি নিয়ে ব্যবহার করে কিংবা পানি বিশুদ্ধ করে না তাদের বেলায় এই ধরণের কলেরা হয়ে থাকে৷’’
প্রতিবেদন : রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার