আদালতে যাবে সুজন
২৫ ডিসেম্বর ২০১৩সুশাসনের জন্য নাগরিক, সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে জানান, হলফনামার তথ্য জানার অধিকার রয়েছে নাগরিকদের৷ এটা গোপন করা হলে তারা এর বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন৷
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীরা, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা, হলফনামায় যেসব তথ্য দিয়েছেন সেখানে আট ধরণের তথ্যের মধ্যে সম্পদের হিসাবও রয়েছে৷ ৫ বছর আগে দেয়া তাঁদের সম্পদের হিসাবের সঙ্গে তা তুলনা করায় বেরিয়ে এসেছে থলের বেড়াল৷ সংবাদ মাধ্যমগুলো এ নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্ট করছে৷
তাতে দেখা যাচ্ছে বিস্ময়করভাবে কারো কারো সম্পদ একশ' গুণও বেড়েছে৷ তাঁদের স্ত্রীদের কোনো প্রকাশ্য আয় না থাকলেও তাঁরাও সম্পদশালী হয়েছেন৷ প্রার্থীরা প্রধানত তাঁদের সম্পদের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন মৎস্য খামার ব্যবসা৷ তবে বাস্তবে মৎস্য খামারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ আর এই সম্পদ বাড়ার তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর কাছের বলে যারা পরিচিত, তাঁরাও রয়েছেন৷ এতে বিব্রত শাসক দল ও সরকার৷
গত রোববার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন বিষয়ক উপ কমিটির আহ্বায়ক ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর সরাসরি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে হলফনামার তথ্য প্রকাশে লিখিত আপত্তি জানান৷ প্রধান নির্বাচন কশিনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন৷
এরপর থেকেই নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে হলফনামার অংশে প্রবেশ করা যাচ্ছে না৷ নির্বাচন কমিশনের সিস্টেম ম্যানেজার অবশ্য দাবি করেছেন, ইন্টারনেটের গতি কম হওয়ার কারণে দেখতে সমস্যা হচ্ছে৷
২০০৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রার্থীদের হলফনামায় আট ধরণের তথ্য থাকার নির্দেশ দেয়৷ এই তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত করার কথা বলা হয়৷ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও হলফনামার তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু আপত্তি উঠছে এবার একপাক্ষিক নির্বাচনের সময়৷
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য জানার অধিকার রয়েছে নাগরিকদের৷ এই অধিকার কোনোভাবেই কেড়ে নেয়া যাবে না৷ কারণ ভোট দেয়ার আগে ভোটার এই হলফনামা অবশ্যই দেখতে চাইতে পারেন৷ তিনি জানান, আদালত বলেছেন হলফনামার তথ্য জানা ভোটারের বাক স্বাধীনতার অংশ৷ কারণ ভোটার ভোটের মধ্য দিয়ে তার নাগরিক অধিকারের সঙ্গে বাক স্বাধীনতাও প্রয়োগ করে৷
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকার কোনোভাবেই হলফনামার তথ্য গোপন করতে নির্বাচন কমিশনকে চাপ দিতে পারে না৷ নির্বাচন কমিশন সেই চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে পারে না৷ তা যদি করা হয় তাহলে এর বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আদালতে যাওয়ার কথা বলেন তিনি৷ কারণ আদালতের মাধ্যমেই নাগরিকরা এই অধিকার পেয়েছেন৷
তিনি বলেন প্রার্থীদের যারা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে৷ তিনি এজন্য দুদককে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান৷