হরতালে অসন্তোষ
৭ আগস্ট ২০১৩মঙ্গলবার এক ঘোষণায় জামায়াত তাদের পূর্বঘোষিত হরতালের তারিখ পরিবর্তন করেছে৷ এবার তারা হরতাল ডেকেছে ১৩ এবং ১৪ই আগস্ট৷ জামায়াতের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিতৃতিতে বলা হয়েছে, ঈদের পর যাঁরা কর্মস্থলে ফিরবেন তাঁদের কথা বিবেচনা করেই তারা তাদের লাগাতার হরতাল একদিন পিছিয়েছে৷
সাধারণ মানুষ কিন্তু একে বলছেন তামাশা৷ ঢাকার চাকরিজীবী আশরাফুল আলম বলেন, তিনি হরতালের আগের তারিখ অনুযায়ী ১৪ই আগস্ট সকালের বাসের টিকেট কিনেছিলেন পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় ফেরার জন্য৷ হরতালের নতুন তারিখ দেয়ার পর তিনি ১৫ই আগস্টের টিকেটের জন্য ফোন করেছেন৷ কিন্তু উত্তর পেয়েছেন যে, পরবর্তী পাঁচ দিনের কোনো টিকেট নেই৷ তাহলে এখন তিনি কি করবেন?
আবার যাঁরা ঠিক করেছিলেন ঈদের দু'দিন পর ফিরবেন, তাঁরাও এখন আগেই ফিরতে বাধ্য হবেন৷ কারণ ১৩ তারিখ থেকে লাগাতার দুই দিনের হরতাল৷ তবুও অনিশ্চয়তা থাকছে৷ এর কারণ, এই হরতালের কারণে অনেকেই এখন হরতালের আগে কর্মস্থলে ফিরতে চাওয়ায় টিকেটের প্রচণ্ড চাহিদা থাকবে৷ ১২ই আগস্টের টিকেট যাঁরা হরতালের কারণে ফেরত দিয়েছিলেন তাঁরা এখন ধরনা দিয়েও সেই টিকেট পাচ্ছেন না বলে জানান ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম৷ তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়৷ তিনি বলেন, পরিবারের লোকজনকে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ আর হরতাল জটিলতায় এখন তিনি শেষ পর্যন্ত নাও যেতে পারেন৷ কারণ ফেররার নিশ্চয়তা নেই৷
এদিকে এবারের ঈদে কক্সবাজারে বিনোদন প্রেমীদের ভিড় কম হবে৷ প্রতি বছর ঈদের সময় এবং পরে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কক্সবাজারে যান৷ কিন্তু হরতালের কারণে এবার সেই প্রবণতা কম৷ কক্সবাজারের হোটেল সী প্যালেসের কর্মচারী ইসমাইল হোসেন জানান, এবার তাদের রুম বুকিং গতবারের তুলনায় ৫০ ভাগ কম৷ তাদের ব্যবসাও লাটে উঠেছে৷
ঢাকার নুরজাহান বেগম জানান, তিনি এবার ঈদে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে কক্সবাজার যাবেন বলে ছয় মাস আগেই পরিকল্পনা করেছিলেন৷ কিন্তু তা মাটি হয়ে গেল হরতালের কারণে৷ ওদিকে যাঁরা ঈদের পরে যাবেন বলে ভেবেছিলেন, তাঁরাও পরছেন না৷ রাকিবুল ইসলাম ও তাঁর পরিবার তাই হতাশ৷ এবারের আনন্দটাই যেন মাটি৷ তাই তাঁদের অনুরোধ, রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষের এই ভোগান্তি যেন বন্ধ হয়৷ অন্তত উত্সব অনুষ্ঠানে রাজনীতিকরা যেন মানুষকে মুক্তি দেন৷