1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যৌন নিগ্রহ

জোয়ানা ইম্পি, লন্ডন/এআই১৫ জুন ২০১৩

শিশু নিগ্রহের ছবি প্রকাশ বন্ধে সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কি আরো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? দুই বালিকা হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্যে সরকারের এক উপদেষ্টা ইন্টারনেটে শিশু যৌন নিগ্রহের ছবি প্রকাশ বন্ধে কড়া উদ্যোগ চাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/18qKD
ছবি: Fotolia/pegbes

গত অক্টোবরে ওয়েলস-এর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অপহৃত হন পাঁচ বছর বয়সি বালিকা এপ্রিল জোনস৷ তাকে অপহরণের পর হত্যা করে মার্ক ব্রিজার নামক এক শিশু নিগ্রহকারী৷ এই হত্যাকাণ্ডের শুনানির সময় দেখা যায়, ব্রিজার জোনসকে হত্যার আগে ইন্টারনেটে শিশু নিগ্রহ এবং ধর্ষণ বিষয়ক ছবি খুঁজেছিল৷

আরেক ঘটনায় গত আগস্টে ১২ বছর বয়সি টিয়া শার্প খুন হয়৷ তাকে হত্যা করে তার পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ স্টুয়ার্ট হাজেল৷ এই শিশু নিগ্রহকারী খুনিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইট ভিজিট করতো এবং বিশেষভাবে শিশু যৌন নিগ্রহের ঘটনার ছবি দেখত৷

এই দুই ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের টনক নড়েছে৷ সেদেশ এখন চাইছে শিশু নিগ্রহের ছবি যাতে ইন্টারনেটে কোনোভাবেই দেখা না যায়, সেই ব্যবস্থা করতে৷ যুক্তরাজ্য সরকারের শিশু ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের প্রতি প্রকাশ্যে অনুরোধ জানিয়েছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি (শিশু নিগ্রহের ছবি) দেখার জন্য বদ্ধপরিকর হয়, তাহলে ছয়-সাত ক্লিকেই সেটা সম্ভব৷''

সার্চ সেটিং পরিবর্তনের আহ্বান

কারের প্রস্তাব হচ্ছে, শিশু নিগ্রহকারীরা যৌন নিগ্রহের ছবি দেখার জন্য যেসব লিংকে প্রবেশ করছে, সেগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হোক৷

তিনি চান, সার্চ ইঞ্জিনগুলো তাদের ডিফল্ট সেটিংস হিসেবে ‘সেফেস্ট অপশন' বেছে নিক যা শুধুমাত্র বৈধ নয় অবৈধ সেক্স সাইটও ব্লক করে দেবে৷ তারপরও যদি কেউ পর্নো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই নিজের প্রকৃত নাম, পরিচয়, বয়স জানিয়ে ও প্রমাণ করে সেটা করতে হবে৷

কার মনে করেন, যুক্তরাজ্যে শিশু পর্নোগ্রাফি অবৈধ হলেও নিজের পরিচয় গোপন রাখা যায় বলেই অনেকে সেসবের অবৈধ ছবি ইন্টারনেটে দেখার চেষ্টা করে৷ তাঁর প্রস্তাব পাস হলে, নাম, পরিচয় প্রকাশ করে কেউ এই ঝুঁকি নিতে চাইবে না৷

Symbolbild Kindermissbrauch Puppe und Gully
শিশু নিগ্রহের প্রশ্নে সার্চ ইঞ্জিনগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছেছবি: Fotolia/Gina Sanders

সার্চ ইঞ্জিনগুলোর সমর্থন

বড় সার্চ ইঞ্জিনগুলো বিভিন্ন দেশের সরকার এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে সাধারণত শিশু নিগ্রহের ছবি মুছে ফেলে৷ এক বিবৃতিতে গুগলের যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক স্কট রুবিন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘শিশু যৌন নিগ্রহ সম্পর্কিত কন্টেন্টের ক্ষেত্রে গুগল কোনো ধরনের ছাড় দেয় না৷ আমরা ইন্টারনেট ওয়াচ ফাউন্ডেশনের সদস্য এবং অর্থ যোগানদাতাদের অন্যতম৷ এই স্বাধীন ফাউন্ডেশন ইন্টারনেটে শিশু নিগ্রহের ছবি খুঁজে বেড়ায় এবং সেগুলোর লিংক আমাদের কাছে পাঠায়৷ এরপর আমরা আমাদের সার্চ ইন্ডেক্স থেকে সেসব লিংক সরিয়ে ফেলি৷ আমরা শিশু নিগ্রহের ছবি পেলে কিংবা কেউ আমাদের এই বিষয়ে সতর্ক করলে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেগুরো সরিয়ে ফেলি এবং উপযুক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষকে জানাই৷''

শিশুদের সকল ধরনের সহিংসতা থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন এনএসপিসিসি-র কর্মকর্তা জন ব্রাউন মনে করেন, ইন্টারনেট থেকে শিশু নিগ্রহের ছবি সরিয়ে নিতে সার্চ ইঞ্জিনগুলো কাজ করছে বটে তবে তাদের এক্ষেত্রে আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে৷

আন্তর্জাতিক ইস্যু

এটাও সত্যি, শিশু যৌন নিগ্রহের বিষয়টি কোনো নির্দিষ্ট দেশভিত্তিক নয়৷ বরং এটি একটি বৈশ্বিক ইস্যু৷ ফলে কোনো দেশের সরকারের একার পক্ষে এই সমস্যা পুরোপুরি সমাধান সম্ভব নয়৷ প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ৷ ব্রাউন এই বিষয়ে বলেন, ‘‘এ ধরনের অনেক অপরাধ যুক্তরাজ্যে সংগঠিত হয় না, এমনকি ইউরোপেও নয়৷ এধরনের অপরাধের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত৷ মোটের উপর এধরনের (শিশু নিগ্রহের) ছবি শেয়ার করাও বেশ সহজ৷''

আইসল্যান্ড এই বিষয়টিকে আরেক পর্যায়ে নিয়ে গেছে৷ চলতি বছরের শুরুতে সেদেশের সরকার এক নতুন প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছে৷ এই খসড়ায় সকল ধরনের পর্নোগ্রাফি পণ্যের বিতরণ নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে৷ এই নিষিদ্ধের মধ্যে যুক্তরাজ্যের মতো শুধুমাত্র শিশু নিগ্রহের ছবি নয়, বরং প্রাপ্ত বয়স্কদের উপযোগী পর্নোও রয়েছে৷ সেদেশের আশঙ্কা, বৈধ পর্নো শিশুদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, কেননা ইন্টারনেটে এসব পর্নো খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং তা নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন৷

আইসল্যান্ড এই খসড়া প্রস্তাব শীঘ্রই অনুমোদন করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ কেননা, গত এপ্রিলে সেদেশের সরকারে পরিবর্তন এসেছে৷ এই খসড়া প্রস্তাব প্রস্তুতকারীদের সরিয়ে ক্ষমতা নিয়েছে মধ্যডানপন্থী জোট৷ এই জোট পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করার সম্ভাবনা কম৷

যুক্তরাজ্য সরকারের উপদেষ্টা জন কার অবশ্য আইসল্যান্ডের প্রস্তাবিত উদ্যোগ মানে পর্নোগ্রাফি পুরোপুরি নিষিদ্ধের পক্ষে নন৷ তিনি শুধু সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কার্যপ্রনালীতে পরিবর্তন আনার পক্ষে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য