স্বাধীনতার স্বীকৃতি পেল দক্ষিণ ওসেটিয়া এবং আবখাজিয়া
২৬ আগস্ট ২০০৮এই মর্মে তিনি একটি অধ্যাদেশে সই করেছেন৷ এর আগে রুশ পার্লামেন্ট এক সর্বসম্মত প্রস্তাবে এই স্বাধীনতা স্বীকার করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল৷ মঙ্গলবার রাশিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কাউন্সিলের একটি বৈঠকের পর, রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এই ঘোষণা দেন৷ রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিনও ঐ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে খবর৷ মেদভেদেভ বলেন, দক্ষিণ ওসেটিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়ার অর্থ হল জাতিসংঘের সনদ এবং ১৯৭৫ সালের হেলসিংকি ঘোষণাপত্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা৷ এছাড়া, মানবাধিকারকেও যথার্থরূপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই ঘোষণার মাধ্যমে৷
স্বাভাবিকভাবেই, এই স্বীকৃতির কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনডোলিসা রাইস এ-সম্পর্কে বলেন : এই দুটি অঞ্চল, যেগুলি নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাব অনুযায়ী স্পষ্টতঃই জর্জিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্তের অন্তর্ভুক্ত, সেগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার রুশ অভিপ্রায় আমি দুঃখজনক বলে মনে করি৷ এর ফলে রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং জাতিসংঘের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও পরিষদের বিভিন্ন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যাচ্ছে৷
বাল্টিক দেশ এস্টোনিয়ার রাজধানী তালিনে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, যে এই পদক্ষেপ ভূমির অখন্ডতার যে নীতি, তার পরিপন্থী৷ এই নীতি আন্তর্জাতিক আইনের উপর ভিত্তি করে প্রণিত৷ আর সে কারণেই এই নীতি গ্রহণযোগ্য নয়৷
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার উদ্যোগে সফররত জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, যে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা চালু রাখতে হলে আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলতে হবে৷ তিনি অবশ্য রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন৷ এর আগে তিনি এস্টোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রুস আনসিপের সঙ্গে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মস্কোর উদ্দেশ্যে জর্জিয়ার ঐক্য ও অখণ্ডতা মেনে চলার ডাক দেন৷ এস্টোনিয়ার পরে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল লিথুয়ানিয়া সফর করবেন এবং ভিলনিয়ুসে প্রেসিডেন্ট ভালদাস আডামকুসের সঙ্গে দেখা করবেন৷
উল্লেখ্য, জর্জিয়ায় রুশ সেনা আগ্রাসনের ইস্যুতে সুইডেন সহ অন্যন্য বাল্টিক দেশগুলি মস্কোর চরম সমালোচনা করে আসছিল৷ কিন্তু, রুশ প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের কথায়, প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাশভিলি তাঁর রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য গণহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন জর্জিয়ায়৷ কারণ, দক্ষিণ ওসেটিয়া এবং আবখাজিয়ার সাধারণ মানুষদের ওপর জর্জিয়ার সেনাদের আক্রমণ, সেখানে শান্তিভঙ্গ করেছিল৷
এদিকে, দক্ষিণ ওসেটিয়া এবং আবখাজিয়াকে এই স্বীকৃতি দেওযার পরিপ্রেক্ষিতে, রাশিয়ার সঙ্গে সব রকমের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ন্যাটো৷ তবে রুশ প্রেসিডেন্ট মেদভাদেভ জানিয়েছেন, যে ন্যাটোর যে কোন পদক্ষেপের মোকাবেলা করতে রাশিয়া এখন প্রস্তুত৷
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর সিক্যুরিটি এন্ড কো-অপারেশেন ইন ইউরোপ বা OSCI দক্ষিণ ওসেটিয়ায় তাদের পর্যবেক্ষণ মিশনের লোকবল বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে৷ আগে ঐ এলাকায় ও OSCI -এর ৮ জন সদস্যের একটি দল থাকলেও, এখন এই সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২০ জনে উন্নীত করা হবে বলে প্রকাশ৷