1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশি বন্ধুদের ফাঁকি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৮ এপ্রিল ২০১৪

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিদেশি বন্ধুদের দেয়া ক্রেস্টে ১ ভরি সোনার বদলে সোনা আছে ৪ আনা আর ১২ আনাই ফাঁকি৷ এই খবর বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর তা নিয়ে চলছে তোলপাড়৷

https://p.dw.com/p/1BdNI
ছবি: Fotolia/Scanrail

কিন্তু এই প্রতারণার জন্য কারা দায়ী তা এখনো জানা যায়নি৷

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪ দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে ৩৩৮ বিদেশি ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে সম্মাননা দেয়া হয়৷ আর সম্মাননায় অন্যান্য উপহার সামগ্রীর মধ্যে দেয়া হয় একটি করে ক্রেস্ট৷ ক্রেস্টে ১ ভরি সোনা এবং ৩০ ভরি রূপা থাকার কথা৷ কিন্তু সরকারি মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই-র পরীক্ষায় দেখা গেছে, তৃতীয় পর্বের ক্রেস্টে ১ ভরি সোনায় আসল সেনা মাত্র সোয়া তিন আনা৷ আর পৌনে ১৩ আনাই সোনা নয়৷ এক ভরি সমান ১৬ আনা৷ অন্যদিকে ৩০ ভরি রূপার পুরোটাই মিছে৷ রূপার বদলে আছে পিতল ও তামা৷ একদিন আগে এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে এখন চলছে তোলপাড়৷

Bangladesch Monument Jatiyo Smriti Soudho
‘‘বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য খুবই বিব্রতকর’’ছবি: National Monument of Savar

সোমবার সাংবাদিকরা এ নিয়ে প্রশ্ন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞাকে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ক্রেস্ট তৈরির বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাজ ছিল না৷ তাই এ বিষয়টি আমার বলার বিষয় নয়৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিটি কাজের একটি বিভাজন থাকে৷ আমাদের কাজ ছিল সাইটেশন ও দাওয়াত কার্ড তৈরি করা এবং আসন বিন্যাস করা৷ কিছু কাজ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ তাই কে কী করেছে, সেটা আমার বলার বিষয় নয়৷''

আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ক্রেস্ট নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে বলেন, ‘‘আমিও কিছুটা শুনেছি ৷ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে যে-ই হোক৷'' ক্রেস্ট সরবরাহ করে ‘এমিকন' নামে একটি প্রতিষ্ঠান৷ আর সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান মীর দাউদ আহমেদের দাবি, ‘‘গলিয়ে পরীক্ষা করার সময় সোনার সঙ্গে রূপা মিশে গেছে৷'' তবে যে যেভাবেই দায় এড়ানোর চেষ্টা করুক না কেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার বিব্রত৷ তাই অপরাধীকে চিহ্নিত করার কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়৷

এ নিয়ে টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য খুবই বিব্রতকর৷ এটি জাতির জন্য অবমাননাকর৷ কারণ এর সঙ্গে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আবেগ জড়িত৷ আর সেই মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিদেশি বন্ধুদের দেয়া সম্মাননা ক্রেস্টে জালিয়াতি করা হয়েছে – যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷'' তিনি বলেন, ‘‘টাকার অঙ্কে এই দুর্নীতি হয়তো খুব বড় নয়৷ তবে সম্মান এবং মর্যাদার প্রশ্নে এটি ক্ষমার অযোগ্য দুর্নীতি৷ কারণ যারা এটা করেছেন, যারা এর জন্য দায়ী, তারা দেশের সম্মানের দিকেও খেয়াল রাখেনি৷ খেয়াল রাখেনি মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের সম্মানের দিকে৷''

তিনি বলেন, ‘‘দায় এড়ানো নয়, এই জালিয়াতি ও দুর্নীতি নিয়ে স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন৷ আর দায়ীদের দিতে হবে শাস্তি৷'' ড. ইফতেখার আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনা প্রমাণ করে, দুর্নীতি কীভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য