স্বর্ণখনির খনন
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩রোমানিয়ায় খনন শুরু হওয়ার কথা ২০১৬ সালে৷ কাজটি করবে ক্যানাডার প্রতিষ্ঠান গ্যাব্রিয়েল রিসোর্সেস আর কাজাখস্তানের এসএটি অ্যান্ড কোম্পানি৷ গ্রিসের হালকিদিকি উপদ্বীপের দুটি জায়গায় স্বর্ণ উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছে সে দেশেরই এলডোরাডো গোল্ড৷ কিন্তু কাজ শুরুর আগেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ৷ পরিবেশবিদ এবং ভূতাত্বিকরা বলছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী খনন কাজ চললে পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি হবে৷
রোমানিয়ায় খনন কাজ চালাতে চারটি পাহাড় বিস্ফোরণে সমতল করা হবে৷ সে দেশের বিজ্ঞান বিষয়ক সবচেয়ে বড় সংস্থা রোমানিয়ান অ্যাকাডেমি সম্প্রতি খননের বিপক্ষে ২১টি যুক্তি দেখিয়েছে৷ পাহাড় ধসাতে বিস্ফোরণ ঘটালে আশপাশে ভূমিকম্পের আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে সেখানে৷ এছাড়া মাটির নিচ থেকে সোনা তোলার কাজে যে সায়ানাইড ব্যবহার করা হয়, তাতেও সমূহ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা৷ রোমানিয়ায় ৩০০ টন সোনা তুলতে বছরে ব্যবহার করা হবে ১২ হাজার টন সায়ানাইড৷ যেখানে এই বিপুল পরিমাণ সায়ানাইড রাখা হবে, সেখানে কোনো রকমের দুর্ঘটনা ঘটলেও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে৷ বিজ্ঞানীদের সেরকমই আশঙ্কা৷
তাছাড়া যত কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে দাবি করা হয়, বাস্তবে সেরকম হয়না বলেও জানিয়েছেন রাজভান ওরসানু৷ রোমানিয়ার এই অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘‘অন্যান্য শিল্পের মতো খনন কাজে খুব বেশি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই৷'' সুযোগ হলেও শেষ পরিণতি যে খারাপ হয় – এ কথা দৃষ্টান্ত দিয়েই বুঝিয়েছেন ওরসানু, ‘‘চারটি স্টিল প্ল্যান্ট ৫ হাজার মানুষকে কাজ দিয়েছিল৷ এই গ্রীষ্মে সবগুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে৷ তা ঠেকাতে সরকার কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি৷''
অথচ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ রোমানিয়া আর গ্রিসের সরকার এখন উত্তোলিত স্বর্ণের ভেতরেই দেখছে উন্নয়নের জোয়ার৷ অথচ খনিতে বড় রকমের দুর্ঘটনা এ অঞ্চলে নতুন কিছু নয়৷ গ্রিসে ২০০০ সালের এক বিস্ফোরণের ফলে এক লক্ষ ঘন ফুট সায়ানাইড নেমে এসেছিল দানিয়ুব নদীতে৷ ঘটনার পর কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় অস্ট্রেলিয়ার এসমেরালডা কোম্পানি৷ মাত্র ১৩ বছর আগের এ অতীতকে ভুলে নতুন করে স্বর্ণ খননের পরিকল্পনার দিকে হাঁটছে গ্রিস সরকার৷ সরকারের বাইরের সব মহল থেকেই উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়৷
এসিবি/এসবি (এএফপি)