স্পেনের ইতিহাসের ভয়াবহতম বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু
২ নভেম্বর ২০২৪শনিবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে সানচেজ জানিয়েছেন, নিখোঁজদের সন্ধানে বন্যা কবলিত এলাকায় নতুন করে পাঁচ হাজার সেনা সদস্য পাঠানো হয়েছে৷ পরিষ্কারের জন্য আড়াই হাজার সেনা নিযুক্ত আছে৷ ‘‘শান্তিকালীন সময়ে এটি স্পেনের সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অভিযান'' বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘সরকার যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ সব কিছুর ব্যবস্থা করে যাবে৷''
মৃত্যুর দিক থেকে ১৯৬৭ সালের পর এটি ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ঘটনা৷ সে বছর বন্যায় পর্তুগালে অন্তত ৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷
এদিকে উদ্ধারকারীরা এখনও বন্যাকবলিত এলাকা থেকে জীবিত মানুষদের উদ্ধারে আশাবাদী৷ ভ্যালেন্সিয়ার মন্টকাডাতে একটি গাড়ির পার্কে তিন দিন আটকে থাকার পর এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করেছেন তারা৷ নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান মার্টিন পেরেৎজ এই তথ্য জানানোর পর বাসিন্দারা হাত তালি দিচ্ছিলেন৷
এদিকে বন্যাকবলিত এলাকার বাড়িঘরগুলো কাদায় ঢেকে গেছে৷ রাস্তায় স্তুপ হয়ে আছে আসবাবপত্র৷ কাদা-মাটি সরানো এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
ভ্যালেন্সিয়ার শহরতলি পিকানিয়ার বাসিন্দা ৭৪ বছর বয়সি এমিলিয়া এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা অ৷সহায় বোধ করছি৷ এখানে অনেকের সহযোগিতা প্রয়োজন৷ শুধু আমার বাড়িতে নয় সব বাড়ি থেকেই আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সব ফেলে দিতে হচ্ছে৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা এমনকি আমাদের পোশাক ধুতে পারছি না, স্নান করতে পারছি না৷
আরেক বাসিন্দা মারিয়া হোসে গিলাবার্ট বলেন, ‘‘আমরা বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি, কারণ কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না৷ সেটা এইজন্য না যে, কেউ আসছে না সহায়তার জন্য৷ বরং স্পেনের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ সহায়তার জন্য আসছেন৷ কিন্তু কবে এই এলাকা আবার বসবাসের উপযুক্ত হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত৷’’
ইউরোপাপ্রেস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে ভ্যালেন্সিয়ার শহর থেকে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছে৷
প্রধানমন্ত্রী সানচেজ জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় নিয়োজিত ১০ হাজার বাড়তি পুলিশ ও সেনাসদস্য নিয়োগ দেয়ার কারণে উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতার কাজে গতি আসবে৷
এদিকে আগামী দুইদিনও বালেয়ারিক দ্বীপপুঞ্জ, কাতালোনিয়না ও ভ্যালেন্সিয়ায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইউরোপে ঘনঘন চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো দেখা দিচ্ছে৷ ভূমধ্যসাগর উষ্ণ হয়ে ওঠায় আগের চেয়ে বেশি সামুদ্রিক জল বাষ্পীভূত হচ্ছে৷ এতে ভারি বর্ষণের পরিমাণ বাড়ছে৷
এফএস/টিএম (রয়টার্স, ডিপিএ)