স্পেনে করোনা শেষ হতেই টমেটো ‘যুদ্ধ’ শুরু
স্পেনের বুনিওল গ্রামে টমেটো নিয়ে আবার যুদ্ধে মেতেছে ২০ হাজার মানুষ৷ করোনার বিরতির পর আবার ‘লা টোমাটিনা’ উৎসবে মেতেছে স্পেনসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ৷ দেখুন ছবিঘরে...
যুদ্ধের শুরু যেভাবে...
টমেটো নিয়ে মারামারি শিশুদেরই বেশি মানায়, তাই না? বাস্তবে হয়েছিলও তাই৷ স্পেনের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর ভ্যালেন্সিয়ার কাছের ছোট্ট গ্রাম বুনিওলে সেই কবে দুই শিশু খেলাচ্ছলে একজন আরেকজনের দিকে টমেটো ছুঁড়তে শুরু করেছিল৷ পাকা টমেটো গিয়ে গায়ে লাগে আর ফাটে৷ দেখতে অদ্ভুত লাগছিল দুই শিশুকে৷ সবাই এমন মজা পেয়েছিল যে তারপর ওই শিশুদের মতো বড়রাও শুরু করে টমেটো নিয়ে যুদ্ধ৷
গ্রাম ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে
প্রথমে গ্রামের মানুষরা টমেটো নিয়ে যুদ্ধে মাতলেও খুব অল্প সময়েই এর খবর ছড়িয়ে পড়ে সারা স্পেনে৷ বাড়তে থাকে ভিড়৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যোগ দেয়ায় গ্রামের সাধারণ এক আনন্দোৎসব হয়ে ওঠে মহোৎসব৷ ১৯৫০ সালে উৎসব বন্ধ করে দেয় সরকার৷ তারপর আবার শুরু হয় ১৯৫৭ সালে৷ ২০০২ সালে বিভিন্ন দেশের পর্যটকদেরও বিপুল আগ্রহ দেখে টমেটো নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন উৎসবের স্বীকৃতি দেয় স্পেন সরকার৷
মাত্র এক ঘণ্টার আনন্দযজ্ঞ
স্প্যানিশ ভাষায় উৎসবটির নাম ‘লা টোমেটিনা’৷ উৎসবের দিন প্লাজা ডেল পুয়েব্লোয় সকাল ১০টায় চার্চের ঘণ্টা বেজে ওঠে৷ কাঠের খাম্বায় ঝুলিয়ে বিশাল এক মাংসপিণ্ড নিয়ে আসা হয় প্লাজায়৷ ট্রাক ভরে ভরে আনা হয় টমেটো৷ স্পেনের ঐতিহ্যবাহী মাংস নীচে নামাতেই ট্রাক থেকে উড়ে আসতে থাকে টমেটো৷ শুরু হয় সেই টমেটো নিয়ে যুদ্ধ৷ আশপাশের বাড়ির মানুষরাও যোগ দেন সেই যুদ্ধে৷ ওপর থেকে ঠান্ডা পানি ছুঁড়ে মারেন তারা৷
সাহিত্য, সংস্কৃতিতে ‘লা টোমেটিনা’
বিশ্বের নানা দেশে অনেক গল্প, গান, কবিতা লেখা হয়েছে ‘লা টোমেটিনা’ নিয়ে৷ বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্রেও দেখা গেছে টমেটো নিয়ে যুদ্ধের এই উৎসব৷ মুম্বাইয়ের ‘জিন্দেগি না মিলে দোবারা’ ছবিও রয়েছে সেই তালিকায়৷
সবাই ‘স্বেচ্ছাসেবক’
অতীতে কোনো কোনো বছর উৎসবে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ যোগ দিলেও এবার বুনুয়েল গ্রামে ভিড় জমিয়েছিল প্রায় ২০ হাজার মানুষ৷ করোনা মহামারি পুরোপুরি বিদায় নেয়ার আগেই শুরু হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ৷ সব দেশের অর্থনীতিতেই পড়েছে যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব৷ এ পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণকারী কমলেও আনন্দ কমেনি ‘লা টোমেটিনা’য়৷ এক ঘণ্টার আনন্দ শেষে বরাবরের মতো এবারও উৎসবস্থল নিজ হাতে পরিষ্কার করেছেন অংশগ্রহণকারীরা৷