সৌদি কনস্যুলেটে ‘মারামারিতে’ প্রাণ হারান খাশগজি
২০ অক্টোবর ২০১৮অবশেষে নিখোঁজ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগজির মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকার করেছে সৌদি আরব৷ তুরস্কে দেশটির কনস্যুলেটে তাঁর মৃত্যু হয়৷ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ শনিবার এই সংবাদ প্রকাশ করেছে৷
সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটরের বরাতে সংবাদ সংস্থাটি লিখেছে, ‘‘জামাল খাশগজি এবং সৌদি কনস্যুলেটে তাঁর সঙ্গে যাদের আলোচনা হচ্ছিল, তাদের সঙ্গে কথোপকথন এক পর্যায়ে ‘মারামারিতে' রূপ নেয়, আর এতে তাঁর মৃত্যু হয়৷''
প্রসঙ্গত, গত দুই অক্টোবর তুরস্কের ইস্তানবুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিঁখোজ ছিলেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশগজি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবনযাপন করা এই সাংবাদিক সেদিন তাঁর তুর্কি বাগদত্তাকে বিয়ে করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন৷
তুরস্ক অবশ্য শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল যে খাশগজিকে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে৷ দেশটির সরকারপন্থি গণমাধ্যম এমন খবরও প্রকাশ করেছে, সাংবাদিককে হত্যার জন্য সৌদি আরব থেকে একটি বিশেষ টিম তুরস্কে আসে এবং তাঁকে হত্যার পর দ্রুত ইস্তানবুল ত্যাগ করে৷ খাশগজিকে নির্যাতন করে হত্যার পর তাঁর মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে লুকিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও দাবি করেছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম৷
খাশগজির মৃত্যুর খবর সৌদি আরব শুরুর দিকে স্বীকার করতে চায়নি৷ বরং বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে ‘উড়িয়ে' দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে দেশটি৷ কিন্তু, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্স বিষয়টি নিয়ে সৌদি সরকারের কাছে পরিষ্কার ব্যখ্যা চায়৷ গতসপ্তাহে একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানায় যে খাশগজির মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি৷
এদিকে, খাশগজির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর তাঁর পরিবার, বাগদত্তা আর বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ হুকাবি স্যান্ডার্স৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই বিয়োগান্তক ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাতে সময়মতো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয় তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি৷''
উল্লেখ্য, খাশগজির মৃত্যুর খবর জানা গেলেও এখনো আরো অনেক কিছু জানা বাকি রয়ে গেছে৷ তিনি কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে মারা গেছেন, সেটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কিনা এবং কারা তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ আন্তর্জাতিক সমাজ এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে৷ সৌদি আরবেরর রাজপরিবারের সঙ্গে খাশগজির মৃত্যুর কোন সম্পর্ক প্রমাণ হলে পশ্চিমা সমাজের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টির আশঙ্কাও করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
এআই/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)