ঢাকা মাতালো সোফিয়া
৮ ডিসেম্বর ২০১৭বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা হয় সোফিয়ার৷ পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি লম্বা সোফিরার পরণে হলুদ-সাদা টপ ও স্কার্ট৷ তাকে দেখে মুগ্ধ হল অফ ফেমের হাজার পাঁচেক দর্শক৷ সেখানে আদতে দু’হাজার দর্শকের থাকার কথা, কিন্তু সোফিয়ার আকর্ষণে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেল দর্শক৷
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণের পর সোফিয়াকে আনা হয় তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘হ্যালো সোফিয়া, হাউ আর ইউ?’’ সোফিয়া বলে, ‘হ্যালো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি খুব গর্ব বোধ করছি৷ আপনার সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুব ভালো লাগছে৷’’
সোফিয়া তাঁকে চিনল কী করে– শেখ হাসিনা এ প্রশ্ন করায় সোফিয়া জানায় যে, সে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক পড়াশুনা করেছে৷ প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর স্বপ্নের ইতিবৃত্ত গড় গড় করে শুনিয়ে দেয় হংকংয়ে তৈরি এই ‘তরুণী’৷
সোফিয়াকে তৈরি করেছে হংকংয়ের হ্যানসন রোবোটিক্স লিমিটেড৷ সোফিয়ার ডিজাইনার ডেভিড হ্যানসন তার সঙ্গে ঢাকায় আসেন৷ কথা বলার সময় সোফিয়ার মুখের অভিব্যক্তি রোবট শিল্পের এক দিক; আবার তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মানুষের কণ্ঠ ও চেহারা শনাক্ত করতে পারার ক্ষমতা তার আরেক আঙ্গিক৷ ডিজিটাল যুগে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও পুতুল খেলা যেন এক হয়ে যাচ্ছে এবং উভয়েই তা থেকে উপকৃত হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের যেসব শিশু নিজের পুতুল নিজেই প্রোগ্রাম করে খেলবে, সোফিয়া যেন সেই অদূর আগামীর হাতছানি৷
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চ ছেড়ে যাবার পর যে হৈ-হট্টগোল শুরু হয়ে যায়, তাতে সোফিয়ার ঘাবড়ে যাবার অবস্থা, কেননা, সে বিশেষ বিশেষ সংলাপের টুকরো শুনে উত্তর দিতে অভ্যস্থ, হাজার মানুষের চেঁচামেচিতে নয়৷ সঞ্চালকদের অনুরোধ সত্ত্বেও গোলমাল না কমায় সোফিয়ার সঙ্গে দু'ঘণ্টার বৈঠক ৪০ মিনিটেই শেষ করে দিতে হয়৷ শুনে এক সহকর্মী বলছিলেন, ‘‘এ যেন ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের চিরপরিচিত বাংলাদেশের মোলাকাত৷ বাংলাদেশ দেখল সোফিয়াকে, সোফিয়াও বাংলাদেশকে দেখে গেল৷’’
এসি/এসিবি