সেই দরিদ্র ভারতীয়র পাশে দাঁড়াবেন বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী
৩১ আগস্ট ২০১৬গত ২৪ আগস্টের খবর৷ ভারতের ওড়িষা রাজ্যের হতদরিদ্র দানা মাঝির স্ত্রী সেদিনই মারা যান কালাহান্ডি জেলার ভবানিপটনা সদর হাসপাতালে৷ মাত্র ৪২ বছর বয়সে যক্ষ্মায় ভুগে মারা যাওয়া স্ত্রীর শোকে দানা মাঝি তখন কাতর৷
কিন্তু স্ত্রীর লাশ তো বাড়িতে নিতে হবে৷ ৬০ কিলোমিটার দূরে বাড়ি৷ সঙ্গে কোনো টাকা নেই৷ লাশ নেবেন কী করে!
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে লাশ বহনের গাড়ি দেয়ার জন্য অনেক কাকুতি-মিনতি করলেন৷ কাজ হলো না৷ জানানো হলো, গাড়ি নেই৷ অগত্যা স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়েই বাড়ির পথে যাত্রা করলেন দানা মাঝি৷
একটু এগোতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন৷ কাপড়ে মোড়ানো লাশটি বাধ্য হয়ে রাস্তার ধারে নামিয়ে রেখে একটু জিরিয়ে নেন৷ আবার শুরু হয় চলা৷ মায়ের করুণ পরিণতির কথা ভেবে আর বাবার কষ্ট দেখে অবিরাম কেঁদে চলে দানা মাঝির ১২ বছরের মেয়ে৷
এভাবে ১০ কিলোমিটার যাওয়ার পর বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের চোখে পড়ে৷ হাসপাতালে ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই চলে আসে গাড়ি৷ হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন হতভাগ্য দানা মাঝি৷
তবে স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়ে তাঁর পথচলার দৃশ্য দেখে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন সবাই৷ স্ত্রী হারানোর দিনে ‘ভবিষ্যতের সুপার পাওয়ার' ভারতের এক দরিদ্র নাগরিকের অমানবিক অসহায়ত্বের মুহূর্তগুলোর দৃশ্য আন্তর্জাতিক মাধ্যমেও প্রচারের আলো পায়৷
সেই সুবাদে ক্ষীণ আশার আলোও জ্বলতে শুরু করেছে দানা মাঝির জীবনে৷ গাল্ফ নিউজ-কে উদ্ধৃত করে ওড়িশার সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ভারতের এক দরিদ্রের কষ্ট মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রীর মনকে ভীষণ নাড়া দিয়েছে৷ বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স খলিফা বিন সালমান আল-খলিফা নাকি আর্থিক সহায়তা দিয়ে দানা মাঝির দারিদ্র্য কিছুটা দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷
বাহরাইনের ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খবরটি ঠিক, তবে প্রিন্স খলিফা বিন সালমান কত টাকা দেবেন তা এখনো জানা যায়নি৷