1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিচারকদের ভূমিকাই মুখ্য হওয়া উচিত’

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৪ অক্টোবর ২০১৭

২০০৬ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন অর্পণা ঘোষ৷ এ পর্যন্ত ৭টি সিনেমা ও অসংখ্য নাটকে অভিনয় করা এই অভিনেত্রী বর্তমান সময়ের সুন্দরী প্রতিযোগিতাগুলো নিয়ে কথা বলেছেন ডয়চে ভেলের সঙ্গে৷

https://p.dw.com/p/2mHiL
Aparna Ghosh - Schauspielerin und Model aus Bangladesch
ছবি: A. Ghosh

ডয়চে ভেলে: সম্প্রতি ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ' প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো৷ এ নিয়ে বিতর্কও হলো৷ আপনি কী মনে করেন?

অর্পণা ঘোষ: আসলে যে বিষয় নিয়ে বিতর্ক হলো সেটা আমি সাপোর্ট করি৷ আমি যেটা জানি, বিচারকরা যাঁকে সিলেক্ট করেছিলেন তাঁকে দেয়া হয়নি৷ বিচারকরা যাঁকে সিলেক্ট করবেন তাঁকে দেয়াই ভালো৷ এখন বিচারকরা যদি গুরুত্ব না পায়, তাহলে এই ধরনের কোনো প্রোগ্রাম না করাই ভালো৷ পাশের দেশ দেখলেই বোঝা যায়, তারা কিভাবে একটা মেয়েকে তৈরি করে৷ আমি নিজেকে দিয়ে বুঝি এটার মাধ্যমে কতটা চেঞ্জ আসে৷ বিচারকদের এই ভূমিকা না থাকলে আজকে আমরা এই জায়গায় আসতে পারতাম না৷ এই বিতর্কটা না হলে আমাদের রং একটা ডিসিশন নিয়ে এগিয়ে যেতে হতো৷

Interview Aparna Ghosh for dwAlaap - MP3-Stereo

এটা কি ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, নাকি আরো বিতর্কিত করবে?

অবশ্যই ভালো দিকে যাবে৷ আসলে এই ধরনের প্রতিযোগিতায় একটি প্রতিষ্ঠান থাকে, এজেন্সি থাকে, কারো বিনিয়োগও থাকে৷ এখানে সবার গুরুত্ব আছে৷ এখানে মেয়েরাও গুরুত্বপূর্ণ, বিচারকরাও গুরুত্বপূর্ণ৷ পুরোটাই সার্কেল৷ এখন এই প্রতিযোগিতা থেকে যে মেয়েরা আসবে, তাদের নিয়ে বিতর্ক থাকবে না৷ যারাই এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে, তারা সবাই এখন অনেক বেশি সতর্ক থাকবে৷

এই ধরনের প্রতিযোগিতায় বিচারকদের কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া হয়?

আমি যদি আমার সময়ের কথা বলি, তাহলে তখন বিচারকরা যাঁকে সিলেক্ট করেছিলেন, তাঁকেই আনা হয়েছে৷ এখানে বিচারকদের ৯০ ভাগ মতামতই কাজে এসেছে৷ আমাদের যে চার মাস ধাপে ধাপে তৈরি করা হয়েছে, তখন বিচারকরাই কিন্তু আমাদের সঙ্গে টাচে ছিলেন৷ অর্গানাইজারদের পছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু বিচারকদের হাতে এগুলো ছেড়ে দেয়া উচিত৷ বিচারকরাই বুঝতে পারেন, আমাদের এই সেক্টরে কোন মেয়েটা আসলে এখানে টিকে থাকতে পারবে, তাকে কী করতে হবে৷ সে এই প্রফেশনকে বিলং করবে কিনা৷ আমার মনে হয়, বিচারকদের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিত৷

আমাদের দেশে তো বিভিন্ন নামে বিউটি কনটেষ্ট হয়, এই প্রতিযোগিতার উপকারিতা কী?

আসলে আমাদের সময়ে আমি চট্টগ্রাম থাকতাম৷ আমার অভিনয় করার শখ বা আমি অভিনয় পারি, কিন্তু কিভাবে আমি এখানে আসবো তার কোনো পথ ছিল না৷ এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি সেই পথ খুঁজে পেয়েছি৷ আমি জানি, আমি সুন্দরী, আমি জানি, আমি ভালো হাঁটতে পারি, তাহলে কেন আমি আমার প্রতিভাটা লুকিয়ে রাখবো? এটাও তো একটা মাধ্যম৷ এখন কিন্তু অনেকের পরিবারই মেয়েদের মডেলিং করতে দেয়, অভিনয় করতে দেয়৷ সে হিসেবে এটা একটা প্ল্যাটফর্ম৷ দেখেন বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় আমাদের পাশের দেশ থেকেই যাকে পাঠাচ্ছে, তাকে ৪/৫ বছর ধরে তৈরি করে পাঠাচ্ছে৷ অথচ আমাদের এখানে এই ধরনের কোনো সুযোগ নেই৷ 

এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় কোন বিষয়কে?

প্রতিযোগিতাগুলো সুনির্দিষ্ট করে হয়৷ যেমন ধরেন, আমি যে প্রতিযোগিতা থেকে এসেছি, সেখানে বলাই হয়েছিল ‘নায়িকার খোঁজে'৷ ‘দারু চিনি দ্বীপ' একটা সিনেমা হবে, সেই সিনেমার নায়িকার জন্য ওইবারের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল৷ আমি হয়েছিলাম ওই সিনেমার নায়িকা৷ একটা মেয়ের কনফিডেন্স লেবেল এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক বেড়ে যায়৷ আমাদের দেশে অভিনয়ে ভালো মেয়ের অভাব রয়েছে৷ এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যারা আসে, তারা ভালো করে৷ যারা ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে আসে, তাদের কিন্তু কোনো ট্রেনিং থাকে না৷ তারা কিভাবে ভালো করবে?

এই প্রতিযোগিতাকে আরো সুন্দর ও বিতর্কমুক্ত করতে হলে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

আমি অনেক জানি এটা বলব না৷ আমার পরামর্শ হলো, একটা টিনএজ মেয়ে এখানে আসে, সে তো সবকিছু জানে না৷ জানতে পারে না৷ ওই মেয়েগুলোকে যা শেখানো হয়, সেটা যেন পারফেক্টলি শেখানো হয়৷ দেখেন, আমাদের ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ' হলো, এখানে একটা মেয়েকে মুকুট দেয়া হলো আবার ফিরিয়ে নেয়া হলো৷ ওই মেয়েটার মধ্যে কী প্রভাব পড়ল সেটা দেখছে না কেউ৷ এটা যাতে না হয়৷ ওরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে আসে৷ সেই স্বপ্নগুলো আমরা যেন পূরণ করতে পারি৷ অনেকে মনে করে, বিউটি কনটেষ্ট খারাপ জায়গা৷ আমি মনে করি, এটা খারাপ জায়গা না, এটা বরং বেশি করে হওয়া উচিত৷

এই যে সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয়, এটা কোনো -না- কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত, এটা কি এমন হওয়া উচিত?

কিছু করারও তো নেই৷ দেখেন, আমাদের নাটক বলেন, সিনেমা বলেন, সবকিছুই একটা নড়বড়ে অবস্থায় আছে৷ সবকিছুই ওই প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর হাতেই আছে৷ আমি জানি না সরকার বা প্রধানমন্ত্রী এটা দেখেন কি-না৷ তিনি যদি একটু নজর দেন, তাহলে কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়৷ আমাদের অর্থনীতি বলেন, রাজনীতি বলেন, সবকিছুই একটা নড়বড়ে অবস্থায় আছে৷ এগুলো ঠিক হলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আমার মনে হয়৷ আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী এদিকে একটু নজর দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে৷

আপনি নিজেও তো এই ধরনের একটা প্রতিযোগিতা থেকে এসেছেন৷ সেখান থেকে কর্মজীবনে প্রবেশের অনুভূতি কী?

আমি মনে করি, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার আমার জন্য আর্শীবাদই ছিল৷ আমি চিটাগাংয়ের মেয়ে৷ অভিনয় করতে চাই, কিন্তু কিভাবে করব, কোথায় যাবো, কিছুই জানতাম না৷ এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি প্ল্যাটফর্মটা পেয়েছি৷ এই জায়গাটাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি৷ এই জায়গাকে ভালো বাসতে হবে৷ দেখেন, রাজনীতি বলেন, চাকরি বলেন, আপনি যেখানেই কাজ করবেন, সেই জায়গাটাকে ভালবাসতে হবে৷ তা না হলে কিছুই হবে না, সফলতা আসবে না৷ অনেক কষ্ট করেছি, একটু একটু করে জায়গা তৈরি করতে হয়েছে৷ আমি যেমন কষ্ট করেছি, এখন তেমন সফলতা পেয়েছি৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য