1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুন্দরবনে বাঘের অভয়ারণ্য দ্বিগুণ

৩ আগস্ট ২০১৭

সম্প্রতি এই অভয়ারণ্য দ্বিগুণের কিছু বেশি, অর্থাৎ ২৩ থেকে বাড়িয়ে ৫২ শতাংশ, করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ প্রধান বন কর্মকর্তা শফিউল আলম বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2ha9v
Bangladesch Tiger
ছবি: AP

শফিউল আলম জানান, সুন্দরবনের বাংলদেশ অংশের প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার ২৩ শতাংশ আগে সংরক্ষিত ছিল৷ বাকি অংশে পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীরা অবাধে ঘোরাফেরা করতে পারতেন৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে সারা দুনিয়ায় বাঘের অন্যতম বড় আবাসভূমি হিসেবে পরিচিত সুন্দরবনে পরিসর বাড়ল সংরক্ষিত এলাকার৷ আর কমল মানুষের অবাধে বিচরণ এলাকা৷

এর আগে, ১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সুন্দরবনের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণের ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৯ দশমিক ৪৯৬ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়৷

এবার সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় (বন শাখা-২) থেকে গত ২৯ জুন এই নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়৷ এতে বলা হয়, বর্তমানে উক্ত অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণের প্রয়োজন হওয়ায় বন অধিদপ্তরের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-র ধারা ১৩-র ক্ষমতাবলে আগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অধিকতর সংশোধনক্রমে সরকার সংরক্ষিত এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে৷

সুন্দরবনের ৬২ শতাংশই বাংলাদেশে৷ বাকি অংশটুকু পূর্ব ভারতে পড়েছে৷ এর বনাঞ্চল ও জলাভূমি যেমন রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও ইরাবতী ডলফিনের মতো বিরল প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল, তেমনি চিত্রল হরিণ, কুমির, বানর, অসংখ্য প্রজাতির পাখি ও পোকামাকড় ধরে রেখেছে এখানকার প্রাণীবৈচিত্র্য৷

এ সব পশুপাখি ও সুন্দরী, কেওড়াসহ হাজারো রকমের গাছগাছালি এই ম্যানগ্রোভ বনে তৈরি করেছে একটি স্বতন্ত্র ইকোসিস্টেম, যা ভেঙে পড়লে সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষাই কঠিন হয়ে পড়বে বলে গবেষণায় প্রমাণিত৷

২০১৫ সালের বাঘশুমারী অনুযায়ী, তার আগের এক দশকে বাঘের সংখ্যা কমেছে আশঙ্কাজনক হারে৷ ২০০৪-এ সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৪৪০টি৷ সেটি ২০১৫ সালে এসে নেমেছে ১০৬টিতে৷ এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বাঘ গবেষক মনিরুল খান বলেন, এ সিদ্ধান্ত সুন্দরবনে ‘ওয়াইল্ড ক্যাট' বৃদ্ধিতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে৷

UNESCO Weltkulturerbe Sundarbans
সুন্দরবনের চিত্রল হরিণছবি: DW/M. Mamun

‘‘আইনটি দরকার ছিল৷ এখন যেটি দরকার তা হলো, এর প্রয়োগ৷ যদি এটি ঠিকমত প্রয়োগ করা যায় তাহলে বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধিতে, বিশেষ করে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে৷'' খান বলছিলেন৷

আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারের বাঘ মনিটরিং সার্ভে প্রকল্পের প্রধান আমির হোসেন৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই বর্ধিত এলাকাটি হবে বাঘের অবাধ বিচরণ ও বংশবিস্তারের অভয়ারণ্য৷ ‘‘এই অংশে সাধারণ মানুষের অবাধ চলাচল বন্ধ করা হবে৷''

সুন্দরবনের আশেপাশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের জীবিকা এই বনাঞ্চলের ওপর নির্ভরশীল৷ তাঁরা সুন্দরবন থেকে মাছ, মধু ও কাঠ সংগ্রহ করেন৷ এদের জন্য এই বর্ধিত সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানান আমির হোসেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য