1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাবনার রমার জন্য শোক

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৭ জানুয়ারি ২০১৪

মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের মৃত্যুতে বাংলাদেশেও শোকের ছায়া নেমেছে৷ সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও শোক জানানো হয়েছে৷ তিনি এক অর্থে বাংলাদেশেরই সন্তান, জন্মেছিলেন পাবনায়৷

https://p.dw.com/p/1AsgJ
Indien Schauspielerin Suchitra Sen gestorben
ছবি: picture-alliance/AP

বাংলাদেশের পাবনায় ১৯৩১ সালে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রমা দাশগুপ্ত৷ ১৯৪৭ সালে বিয়ের সূত্রে চলে যান কলকাতায়৷ এরপর ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়' সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন৷ পাবনার রমা হয়ে ওঠেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন৷

তাই সুচিত্রা সেনের মৃত্যুর খবর জানার পরপরই বাংলাদেশে, বিশেষ করে পাবনায় শোকের ছায়া নেমে আসে৷ তাঁর অসুস্থতার খবরে আগে থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন পাবানাবাসী৷ পাবনার সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. রামদুলাল ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা মহানায়িকার আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা সভা করেছেন৷ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছেন৷ আর তাঁর মৃত্যুর খবরে তাঁরা এখন আপনজন হারানোর বেদনায় মুহ্যমান৷ তিনি জানান, সন্ধ্যায় তাঁরা পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শোকসভার আয়োজন করেছেন৷ হবে স্মরণসভাও৷

সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ি পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকার হিমসাগর লেনে৷ সেখানে তাঁদের একতলা বাড়িটি এখনো আছে৷ কিন্তু তা দখল করে নিয়েছে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্ট৷ সেখানে তারা এখন একটি ‘কিন্ডারগার্টেন' চালাচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান পাবনার সাংবাদিক কলিট তালুকদার৷ তিনি জানান, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ অনেক চেষ্টা করেও বাড়িটি উদ্ধার করতে পারেনি৷ পারলে তাঁর স্মৃতিধন্য বাড়িটি সংরক্ষণ করা যেত৷ ডা. রামদুলাল জানান, তাঁদের আবেদনে জেলা প্রশাসন বাড়িটি অবমুক্ত করার নির্দেশ দিলেও উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ এনে বাড়িটি এখনো দখলে রেখেছে ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্ট৷ তাঁরা শুক্রবার তাঁদের শোকবার্তায় বাড়িটি অবমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন৷ সাংবাদিক কলিট তালুকদার জানান দখলদাররা সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়িটির মূল কাঠামো পরিবর্তন করেছে৷ ছাদ ভেঙে টিন লাগিয়েছে৷ প্রতিবাদ জানিয়েও কাজ হয়নি৷

Haus der bengalischen Schauspielerin Suchitra Sen
ছবি: Harunur Rashid Swapan

সুচিত্রা সেন পাবনা সরকারি গার্লস স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন৷ তখই তার বিয়ে হয় ঢাকার গেন্ডারিয়ার শিল্পপতি দীননাথ সেনের ছেলের সঙ্গে৷ তাঁদের শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল কলকাতায়৷ সেই সূত্রেই সুচিত্রা সেনের কলকাতায় যাওয়া৷ তাঁর শ্বশুরের নামেই ঢাকার গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন লেন এখনো আছে৷

সুচিত্রা সেনের সহপাঠীদের কেউ কেউ এখনো আছেন পাবনায়৷ তাঁদের একজন অঞ্জলী গোস্বামী৷ তিনি সুচিত্রা সেনের সঙ্গে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন৷ তিনি জানান, কলকাতায় সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়৷ বিয়ের পর সুচিত্রা সেন তাঁর স্বামীকে নিয়ে মাত্র একবার পাবনায় এসেছিলেন৷ তখন তিনি স্কুলে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা করেন৷ তবে তখনও তিনি সিনেমায় অভিনয় শুরু করেননি৷ প্রস্তুতি চলছিল৷ তাঁর পরিবারের সদস্যরা কলকাতা যান আরো পরে৷

পাবনায় সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ প্রতিবছর নভেম্বরে সাত দিনব্যাপী সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র উৎসব করে আসছে গত কয়েক বছর ধরে৷ আর এই উৎসবে বাংলাদেশের বাইরে থেকেও চলচ্চিত্রকার এবং গবেষকরা অংশ নেন৷ দেখানো হয় সুচিত্রা সেনের চলচ্চিত্র৷ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. রামদুলাল জানান, তাঁরা সুচিত্রা সেনকে তাঁদের অন্তরে ধারণ করেন৷ পাবনাবাসী তাঁকে নিয়ে গর্বিত৷

এদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সুচিত্রা সেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন৷ শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ছিলেন সুচিত্রা সেনের অভিনয় নৈপুণ্যের একনিষ্ঠ অনুরাগী৷ ‘‘তাঁর মৃত্যুতে বাঙালি হারালো চিরায়ত কন্যা, জায়া, জননীর আটপৌরে প্রতিভাকে৷ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের উৎকর্ষে ও আগামীর অনুপ্রেরণায় এই শিল্পী আমাদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান