মূল কারণ গরুর ব্যাবসা
২৭ জুন ২০১৩বিজিবি-র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চলতি বছরের ২০শে জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরে সীমান্তে ২১৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন ৩২৩ জন৷ আর এই সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ নাকি গরুর ব্যাবসা৷ তিনি জানান, যে কারণেই হত্যাকাণ্ড ঘটুক না কেন প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে৷ এই বছরেই ২৩শে জুন পর্যন্ত ৪৫টি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে বিএসএফ-এর কাছে৷ জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিএসএফ-এর সঙ্গে বিজিবি ২ হাজার ২২০টি পতাকা বৈঠক করেছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে৷ তবে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটেছে৷
মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৫০০ কি.মি. অরক্ষিত সীমান্ত রয়েছে৷ ঐ সীমান্তে টহল দিতে পারে না বিজিবি৷ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ৯৩৫ কি.মি. সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে৷ তিন বছরের মধ্যেই এই সড়ক নির্মাণ শেষ হবে৷
এদিকে আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিজিবি মহাপরিচালকের দেয়া পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটেনি৷ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত আছে৷ ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে বার বার সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয় হলেও, তা কার্যকর হয়নি৷ তিনি বলেন, গরুর চোরাচালানির কারণে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ঘটছে – এটা বহু পুরনো কথা৷ ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু রপ্তানির ব্যাবসা নিয়ন্ত্রিত৷ তাই দুই সরকারের উচিত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই ব্যাবসার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া৷ তিনি মনে করেন, গরু ব্যাবসাকে পুরোপুরি বৈধ করে দেয়া উচিত৷
নূর খান মনে করে,ন সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবাঙালি বিএসএফ সদস্য নিয়োগ৷ ভাষা এবং সংস্কৃতির দূরত্বের কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়৷ তাই পাকিস্তান সীমান্তে কাজ করার মেজাজ নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে কাজ করলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না৷
তিনি মনে করেন, সীমান্ত এলাকায় ব্যাবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, যোগাযোগ এবং আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারে পাসপোর্ট ভিসার বিকল্প কোনো পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে৷ এটা হতে পারে স্থানীয়ভাবে কোনো ধরণের অনুমতির ব্যবস্থা৷ এতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে৷
ওদিকে বিজিবি মহাপরিচালক জানান, চলতি বছরের ১১ই জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ২ হাজার ৮৬৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে৷ এদের মধ্যে ২ হাজার ৮৫৭ জনকে ‘পুশব্যাক' করা হয়েছে মিয়ানমারে৷ আর ১১ জনকে দেয়া হয়েছে পুলিশের হাতে৷