সিরিয়ায় সংঘর্ষ
১ জুলাই ২০১২সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে৷ দামেস্ক প্রদেশের একাধিক এলাকায় গোলাবর্ষণ করছে সরকারি সেনারা৷ মাত্র একদিন আগে সিরিয়ার রাজধানীর একটি এলাকায় মর্টার হামলায় প্রাণ হারায় অন্তত ৩০ ব্যক্তি৷ লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে এই তথ্য৷
সংগঠনটি জানায়, সেনারা দারা শহরে রাতভর গোলাবর্ষণ করেছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছে চার ব্যক্তি৷ দামেস্কে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের খবর জানিয়েছে সংগঠনটি৷ তবে এতে হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি৷ অবজারভেটরি জানায়, আল-তাল এবং দুমা শহরে এক বেসামরিক নাগরিক এবং এক বিদ্রোহী সেনা প্রাণ হারিয়েছে৷
এছাড়া হামা প্রদেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে সরকারি সেনারা পাঁচ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে৷ সেখানে অবস্থানরত এক অ্যাক্টিভিস্ট বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, সরকারি সেনারা হালফায়ায় গোলা বর্ষণ করেছে৷ এছাড়া স্থানীয় একটি গোষ্ঠী দাবি করেছে, সামরিক বাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে হামলা চালায়৷
এদিকে, সিরিয়া সংকট নিরসনে সেদেশে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক সমাজ৷ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক বৈঠকের পর জাতিসংঘের বিশেষ শান্তি দূত কোফি আনান জানিয়েছেন এই তথ্য৷ আনান'এর প্রস্তাব অনুযায়ী বর্তমান সরকারের এবং বিরোধীদের সমন্বয়ে নতুন এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যেতে পারে৷ এছাড়া সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যমকে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত বলে মত প্রকাশ করেন আনান৷ একইসঙ্গে তিনি সিরিয়ায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান৷
বলাবাহুল্য, সিরিয়ার বিরোধী পক্ষ কোফি আনানের প্রস্তাবকে কিছুটা ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করেছে৷ সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল'এর মুখপাত্র বাসমা কাদমানি এই বিষয়ে বলেছেন, সিরিয়া বিষয়ক শনিবারের বৈঠকের চূড়ান্ত ঘোষণায় কিছু ইতিবাচক দিকের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে এই পরিকল্পনার মূল বিষয়গুলো অস্পষ্ট এবং পরিকল্পনায় সেদেশের রক্তাক্ত সংঘাত বন্ধে বাস্তবিক অর্থে দ্রুত কী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেটাও পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না, জানান কাদমানি৷ কিছু গণমাধ্যম অবশ্য জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকারি এবং বিরোধী উভয় পক্ষ কোফি আনান'এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে৷
প্রসঙ্গত, তুরস্কের একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে সিরিয়া এবং তুরস্কের মধ্যে৷ তুরস্কের সেনাবাহিনী রবিবার দাবি করেছে, সেদেশের বিমানটি ২২ জুন সিরিয়ার আকাশসীমায় নয়, বরং আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিরস্ত্র অবস্থায় উড়ছিল৷ তাসত্ত্বেও সিরিয়া সেটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে৷ যুদ্ধবিমানটির দুই পাইলটকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
এআই / আরআই (এএফপি, রয়টার্স)