রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ
৭ মে ২০১৩রবিবার ভোরেই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে শোনা গেল মারাত্মক বিস্ফোরণের শব্দ৷ বলা হচ্ছে, লক্ষ্যবস্তু ছিল অস্ত্রের এক গুদাম, যেখানে নাকি ইরান থেকে পাঠানো ‘ফতেহ ১১০' ক্ষেপণাস্ত্র জমা ছিল৷ তাও সিরিয়ার জন্য নয়, লেবাননে হেজবোল্লাহ-র জন্য৷ সিরিয়ার দাবি, সেটা আসলে সামরিক গবেষণা কেন্দ্র৷ বিদ্রোহীদের সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করেছে, ইসরায়েলের হামলার ফলে কমপক্ষে ৪২ জন সিরীয় সৈন্য নিহত হয়েছে৷
গোটা অভিযান নিয়ে অস্পষ্টতা এখনো কাটে নি৷ ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছিল নাকি শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, তা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে৷ ইসরায়েল এ বিষয়ে বিশেষ কিছু বলতে রাজি নয়৷ জানুয়ারি মাসেও একই লক্ষ্যবস্তুর উপর ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল৷ এক্ষেত্রে সরাসরি সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এমনটা মনে করছেন না৷ কিন্তু সিরিয়ার অরাজকতার সুযোগ নিয়ে ইসরায়েলের জাতশত্রু হেজবোল্লাহ শক্তিশালী হয়ে উঠুক, এমনটা হতে দিতে চায় না সে দেশ৷
এমন হামলার মুখে বাশার আল-আসাদের সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাবার ইচ্ছা বা ক্ষমতা রাখে কি না, তাও বলা কঠিন৷ সম্প্রতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কিছু সাফল্য পেয়েছে আসাদের বাহিনী৷ আপাতত, তাদের হামলা প্রতিহত করতেই ব্যস্ত সরকার৷
সিরিয়ার সংকটের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সমাজের হাত-পা কতটা বাঁধা, তাও বার বার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ বাশার আল-আসাদের সরকার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার আলোকে সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সামরিক অভিযানের দাবি বেড়ে চলেছে৷ কিন্তু এবার বিদ্রোহীদের একাংশের বিরুদ্ধেও একই রকম অভিযোগ শোনা যাচ্ছে৷ জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারী কার্লা ডেল পন্টে বলেছেন, বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রামে মারাত্মক সারিন গ্যাস ব্যবহার করেছে, এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ তবে এ বিষয়ে চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হতে আরও তদন্ত চালাতে হবে৷
এমন জটিল পরিস্থিতিতে আসাদের অপসারণ চাইলেও বিদ্রোহীদের ভাবমূর্তি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে৷ তাদের মধ্যে চরম ইসলামপন্থি, আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ, সাম্প্রদায়িক শক্তিও রয়েছে, যারা ক্ষমতায় এলে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা কেউ জানে না৷
এসবি/ডিজি (ডিডাব্লিউ, এএফপি)