সিরিয়ার দিয়ার আল-জাওয়ার শহরে গোলাবর্ষণ
৮ আগস্ট ২০১১সিরিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি
নিজ দেশের বেসামরিক গণতন্ত্রপন্থীদের উপর দমনপীড়ন বন্ধে সিরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে৷ তা সত্ত্বেও থেমে নেই সিরিয়ার সেনাবাহিনী৷ দিয়ার আল-জাওয়ার শহরে রবিবার গুলি এবং গোলাবর্ষণ করে সেনাবাহিনী৷ এতে প্রাণ হারায় কমপক্ষে ৫০ ব্যক্তি৷ সোমবার ভোর থেকে আবারো সে শহরে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে নিরাপত্তাবাহিনী৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বার্তাসংস্থাগুলো জানাচ্ছে, নিরাপত্তাবাহিনী অভিযানে ট্যাংক এবং মেশিনগান ব্যবহার করছে৷ সেনা অভিযানে আহত সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছে৷ কেননা, সরকারি গোয়েন্দারা হাসপাতালে অবস্থান করছে৷ অন্যদিকে, সহিংসতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালও বন্ধ৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ'এর পদত্যাগের দাবিতে সেদেশে গত কয়েকমাস ধরে চলছে সরকারবিরোধী আন্দোলন৷ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, গত মার্চ থেকে চলা এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১,৭০০ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে৷ এছাড়া আরো কয়েক হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী৷
সিরিয়া সরকারের এ দমনপীড়ন প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজ
কুয়েত এবং সৌদি আরব সিরিয়া থেকে নিজ নিজ দেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে৷ এক বিবৃতিতে সৌদি কিং আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, সৌদি সরকারের কাছে সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়৷ কেননা, সেখানে যাকিছু হচ্ছে তা ন্যায়সংগত নয়৷ একইসঙ্গে কিং আব্দুল্লাহ সিরিয়া সরকারকে অবিলম্বে ‘ডেথ মেশিন' বন্ধের আহ্বান জানান৷ কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল-সাবাহ জানিয়েছেন, সিরিয়ার হত্যাযজ্ঞ কেউ মেনে নিতে পারে না৷ সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে৷ এছাড়া সিরিয়ার পাশের দেশ জর্ডানও বাশার সরকার'এর সমালোচনা করে বলেছে, সহিংসতা নিরসনে দ্রুত সংলাপ এবং সংস্কার কর্মসূচি শুরু করতে হবে৷ বলাবাহুল্য, আরব বিশ্ব মুখ খোলায় এবার আরো চাপে পড়লেন বাশার আল-আসাদ৷
সিরিয়া ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন'এর বর্তমান অবস্থান
ইউরোপের দেশগুলো সিরিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তির উপর আরো নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করছে৷ বিশেষত, সেদেশের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ইতিমধ্যে সিরিয়ার উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইইউ৷ একইসঙ্গে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সম্পদ জব্দ ও তাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ নিষিদ্ধের এই তালিকা আরো বড় করতে পারে ইইউ৷ তবে, সিরিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বিশেষ করে সেদেশ থেকে তেল এবং গ্যাস ক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞার দিকে এখনই যাচ্ছে না ইউরোপ৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ