‘সিরিয়ার আসাদকে চাপে ফেলতে চীন, ভারতকেও চাই’ - হিলারি
১২ আগস্ট ২০১১সিরিয়ার অভ্যন্তরে সুশীল সমাজের ওপর যেভাবে ক্রমশ প্রশাসনিক পীড়ন বেড়ে চলছে, তাকে আর সহ্য করতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু নিজেরা আগবাড়িয়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে গদিচ্যুত করার উদ্যোগ নিতেও ওয়াশিংটন চায় না৷ বরং তারা চায়, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে উঠুক৷ গতকাল বৃহস্পতিবার, সিরিয়ায় সরকার বিরোধী প্রতিবাদকারীদের ওপর ফের সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ আজ শুক্রবার বা জুম্মাবারে সকাল থেকে কিছু খবর মিলছে, যা আদৌ সন্তোষজনক নয়৷
অতএব সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের লক্ষ্য নিয়েই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন মুখ খুলেছেন৷ হিলারির মতে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে গদিচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্র আদৌ একা উদ্যোগ নিতে রাজি নয়৷ তার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক জনমত৷ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশকে পাশে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ এখন হিলারি চান, ভারত আর চীনের মত দ্রুত উন্নতিশীল দেশগুলিরও উচিত আসাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা৷ হিলারির মতে, ভারত বা চীনের ওপর সিরিয়ার যথেষ্ট নির্ভরশীলতা রয়েছে বাণিজ্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে৷ সুতরাং নতুন দিল্লী বা বেইজিং-এর কাছ থেকে চাপ সৃষ্টি হলে, সেটাকে ফেলতে পারবে না দামাস্কাস৷
এদিকে, সিরিয়ার প্রশাসনকে চাপে রাখতে তাদের ওপর অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বাড়াতেও ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অ্যামেরিকা৷ সিরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক এবং প্রধান মোবাইল ফোন সংস্থার ওপর গত সপ্তাহেই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন৷ সেগুলির উল্লেখ করে সিবিএস টেলিভিশন নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিলারি ক্লিন্টন আরও জানান, এভাবেই যদি বিশ্বের সমস্ত শান্তিকামী এবং গণতন্ত্রপ্রেমী দেশ এগিয়ে আসে, তাহলে আসাদকে কব্জায় আনতে বেশি সময় লাগবেনা৷ সিরিয়ায় চলতি সরকার বিরোধী আন্দোলনের এক নেতা আমের আল সাদেককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা যতো বাড়ানো যায় আসাদকে এবং সেইসঙ্গে তাঁর সমর্থকদের চাপে ফেলতে তা ততই কার্যকরী৷ এর ফলে দ্রুত যে জনমত দেশের অভ্যন্তরে গড়ে উঠবে, তাতে আসাদের গদি টলবে বলেই সাদেকের বিশ্বাস৷
কিন্তু আসাদকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার জন্য কেন অ্যামেরিকা চাপ দিচ্ছে না, এ প্রশ্নের জবাবে হিলারি জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় একটি সর্বমতের সিদ্ধান্ত৷ যা আন্তর্জাতিক মহল থেকে একজোটে উঠে আসাটা জরুরি বলে মনে করে ওয়াশিংটন৷ তাতে নেতৃত্ব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি নেই৷ কিন্তু, তারা একাই কোনরকম উদ্যোগ নিতে চায়না৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ