সালাফিদের সঙ্গে কফিপান, কেমন সেটা?
১৫ জানুয়ারি ২০১৩বন শহরের সালাফিদের খোঁজে নাওমি যান একটি পেট্রোল পাম্পে৷ গেছেন দুই সালাফি মাওলানার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের আসায়৷ বিকেল পাঁচটা নাগাদ বছর বিশেকের এক তরুণ আবির্ভূত হয়ে হেসে বললেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা উগ্রপন্থি৷'' তবে করমর্দন করলেন না৷ বললেন: ‘‘বুঝতেই পারছেন, কেন৷''
তরুণটি জানালেন, তিনি মাওলানাদের সঙ্গে নাওমির আলাপ-আলোচনার ভিডিও তুলবেন৷ সেটা নাকি দু'পক্ষের জন্যই বেশি নিরাপদ৷ নাওমি ছবিতে থাকতে চাইবেন কিনা, তা-ও জিজ্ঞাসা করে নিলেন৷ মাওলানারা স্বয়ং বসে ছিলেন পেট্রোল পাম্পের উল্টোদিকে একটি কাফেতে৷ সেখানে তুর্কি গান বাজছে৷ অপেক্ষাকৃত বয়স্ক মাওলানা, ইব্রাহিম আবু নাগি, তাঁর কফিতে চামচ নাড়ছেন৷ তরুণ মাওলানা আবু দুয়ানা, তাঁর সাদা আইফোন নিয়ে ব্যস্ত৷
আবু নাগি সালাফি ধর্মাদর্শকে বলেন ‘‘সত্যকারের ইসলাম'', কিন্তু নিজেকে বলেন, একজন মুসলিম৷ বলেন না, ‘‘আমি সালাফি''৷ ওটা নাকি মুসলিমদের বিভক্ত করার জন্য গণমাধ্যম এবং রাজনীতির সৃষ্টি৷ তার পিছনে ‘‘জিওনিস্টদেরও'' দেখেন আবু দুয়ানা, যার পরের মন্তব্য: ‘‘এবার তো নিশ্চয় শরিয়া নিয়ে প্রশ্ন করবেন?'' আবু দুয়ানা স্বয়ং বিশ্বদ্যালয়ের ছাত্র৷ জার্মানিতে শরিয়া আইন চালু করতে পারলে ভালো হতো বলছেন, কিন্তু সেটা যে সম্ভব নয়, তা'ও জানেন৷
দুই মাওলানার পরিচয় হয় আট বছর আগে কোলোনের কাছে ফ্রেশেন-এর একটি মসজিদে৷ আট বছর ধরে প্রচারণার কাজে ব্যস্ত দু'জন৷ ওয়াজ করেন কিন্তু জার্মানে, সেটাই নতুনত্ব৷ সেটাই জার্মানিতে মানুষকে টানে৷ সিডি থেকে ইন্টারনেট থেকে সেমিনার, সব পন্থাই ব্যবহার কে থাকেন তারা৷ সহিংসতা-প্রবণ সালাফিদের সঙ্গে তারা নাকি কথা বলে থাকেন৷ তবে রাজনীতিকদের সঙ্গে তারা কথা বলতে রাজি নন, আবু নাগি তো নয়ই৷
যদি না ম্যার্কেল মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন৷ যেমন গুপ্তচর বিভাগের লোকজন তার টেলিফোনে আড়ি পাতে: ‘‘নিশ্চয় তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে মুসলমান হয়ে গেছে,'' রসিকতা করলেন নাগি৷
জার্মানিতে সালাফিদের সংখ্যা হাজার চারেক বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ তাদের মধ্যে সহিংসতায় বিশ্বাসীদের সংখ্যা নগণ্য হলেও, সালাফি থেকে জিহাদি হতে বেশি সময় লাগে না, বলে গুপ্তচর বিভাগের ধারণা৷