1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সারাদেশে আন্দোলন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ আগস্ট ২০১৪

বাংলাদেশের তুবা গ্রুপের পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন৷ তারা মালিক দেলোয়ার হোসেনের জামিন বাতিল এবং তাঁকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1CnqO
Feuer in Tazreen Fabrik November 2012
২০১২ সালে গার্মেন্টসে আগুনে ১১৩ জন শ্রমিক নিহত হন (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

শনিবার সকালে তুবা গ্রুপের শ্রমিকরা বাড্ডায় পোশাক কারখানার সামনে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়৷ তারা যাতে সামনের রাস্তায় সমাবেশ করতে না পারে এজন্য ব্যারিকেড দেয় পুলিশ৷ কিন্তু পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে তারা বিক্ষোভ এবং সমাবেশ করেন৷ তাদের এই সমাবেশে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এবং বাম রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা যোগ দেন৷

সমাবেশ থেকে বলা হয়, বেতন ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের অনশন এবং আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ তারা বলেন, শ্রমিকদের এই আন্দোলন সারদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে৷ তারা তুবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেনের জামিন বাতিল করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান৷

প্রসঙ্গত, তুবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন তাজরীন ফ্যাশনস-এরও মালিক৷ ২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর এই গার্মেন্টস এ আগুনে ১১৩ জন শ্রমিক নিহত হন৷ আর সেই মামলায় কারাগারে থাকা দেলোয়ারের জামিন হয়েছে গত সপ্তাহে৷ রবি বা সোমবারে তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পেতে পারেন৷

শনিবার সকাল ১১টা খেকে দুই ঘণ্টার সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘‘বেতন-বোনাস থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে ১৬০০ শ্রমিককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে হয়েছে৷''

তিনি শ্রমিকদের তিনমাসের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শ্রমিকদের ওভারটাইমের সমান মজুরি দেওয়ারও দাবি জানান৷

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘আমাদের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না৷ তাই তুবা গ্রুপের শ্রমিকদের পাওনা চার কোটি টাকা তো কিছুই না৷ তাহলে কেন তাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হলো না৷''

তিনি বলেন, ‘‘এই আন্দোলন শুধু তুবা গ্রুপের ১৬০০ শ্রমিকের না, দেশের ১৬ কোটি মানুষের আন্দোলন৷''

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘‘মালিকরা মুনাফার জন্য মিথ্যাচার করছে৷ মাত্র চার কোটি টাকা মালিকদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না এটা ঠিক না৷ আর যদি মালিক না পারেন তাহলে তার দায় নিতে হবে বিজিএমইএ-কে৷ বিজিএমইএ যদি অপারগ হয় তাহলে দেশে সরকার আছে, সরকার শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের ব্যবস্থা করবে৷''

তিনি তুবার শ্রমিকদের পাঁচ দফা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে এ দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলনে গড়ে তোলার আহ্বান জানান৷

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের জন্য শত শত কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দেওয়া হয়েছে৷ সেগুলো থেকে কেন তুবার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়া হচ্ছে না৷ তুবার শ্রমিকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিশ্চুপ কেন?''

বিক্ষোভ সমাবেশে তুবা গ্রম্নপের শ্রমিক পারুল বেগম বলেন, ‘‘আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছি৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব৷ আমরা মালিকের মুক্তি না, আমাদের বেতন চাই৷''

তিনি বলেন, ‘‘তারা (বিজিএমইএ) বারবার তারিখ দিয়েও আমাদের বেতন আদায় করে দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ তাই তাদের প্রতিশ্রুতিতে আর বিশ্বাস করা যায় না৷ টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ হবে না৷''

উল্লেখ্য, তিন মাসের বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে টানা ছয়দিন ধরে তুবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন৷ শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৯০ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য