সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের অভিযোগ মোদীর বিরুদ্ধে
২৩ এপ্রিল ২০২৪বিরোধীরা হিন্দুদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তা 'অনুপ্রবেশকারীদের' মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছে। গত সপ্তাহান্তে একটি নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে মোদী এমনই মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। কংগ্রেস এবং সিপিএমের দাবি, 'অনুপ্রবেশকারী' বলতে এখানে মুসলিমদের কথা বলা হয়েছে। এটি সরাসরি একটি সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও একই অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
গত রোববার রাজস্থানে একটি নির্বাচনি প্রচারে গেছিলেন মোদী। সেখানে তিনি বলেছেন, রাজস্থানের সাবেক কংগ্রেস সরকার মুসলিমদের বিশেষ সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্রের অর্থের প্রথম অধিকার মুসলিমদের দেয়ার কথা বলেছিল কংগ্রেস। বলা হয়েছিল, যাদের বেশি বাচ্চা, তাদের ঘরে বেশি অর্থ পৌঁছে দেওয়া হবে। অর্থ দেয়া হবে অনুপ্রবেশকারীদের। এরপর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মোদী প্রশ্ন করেন, ''আপনারা কি চান, আপনাদের কষ্টের টাকা অনুপ্রবেশকারীদের হাতে যাক?''
কংগ্রেস এবং সিপিএমের অভিযোগ, মোদীর কথায় স্পষ্ট, তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে একথা বলেছেন। তার বক্তব্য সাম্প্রদায়িক এবং সংবিধানবিরোধী। নির্বাচন কমিশনের তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন ভোট ঘোষণার সময় জানিয়েছিল, সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কোনো বক্তৃতা বরদাস্ত করা হবে না। যারা সেকাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্য়বস্থা করা হবে। শুধু তা-ই নয়, স্টার ক্যাম্পেনার বা তারকা প্রচারকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম জারি করা হয়েছে এবার। বলা হয়েছে, তারকা প্রচারকেরা যদি সাম্প্রদায়িক কথা বলেন, তাহলে তার শাস্তি পেতে হবে দলকে। সরাসরি দলের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা নেয়া হবে। কংগ্রেস এবং সিপিএম নির্বাচন কমিশনকে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে এবিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে। তারকা প্রচারক হিসেবে মোদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, ''আমরা আশা করছি নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।''
নরেন্দ্র মোদী এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেছেন, ''মোদী সত্যকে সত্য় বলেছেন। তিনি যা বলেছেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তা বিশ্বাস করেন।''
তবে ভারতীয় সংবিধান সাম্প্রদায়িক মন্তব্যকে প্রশ্রয় দেয় না। সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কাজের বিরুদ্ধে কঠোর আইন আছে। নির্বাচনের বিধিতেও সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে। তবে ভারতে এর আগেও বিভিন্ন দলের রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে এধরনের বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশন সব সময় ব্যবস্থা নিয়েছে, এমনটা বলা যায় না।
এসজি/জিএইচ (নির্বাচন কমিশন)