‘সামাজিক সমতাকে বিপদের মধ্যে ফেলবে ইবোলা'
২০ নভেম্বর ২০১৪ডয়চে ভেলে: জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে বিশ্বে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইবোলা৷ জার্মান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ইবোলার বিরুদ্ধে লড়তে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুকি হতে হবে বলে মনে করছেন আপনি?
ওয়াল্টার লিন্ডার: আমি পশ্চিম আফ্রিকায় দু'সপ্তাহেরও বেশি সময় থেকেছি৷ ফলে আমার দেখার সুযোগ হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ কী কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে৷ সব দেখে আমার মনে হয়েছে সমস্যার ব্যাপকতাটা ভয়াবহ৷ এটা কেবল চিকিৎসার ক্ষেত্রে নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে৷ আমার মতে পশ্চিম আফ্রিকার তিনটি দেশে ‘সামাজিক ফেব্রিক' বা ‘সামাজিক সমতা' বিপদের মুখে রয়েছে৷ তাই সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে, যা নিয়ে আমি চিন্তিত৷
জাতিসংঘের ‘ইবোলা এমারজেন্সি রেসপন্স মিশন'-এর প্রধান অ্যান্থনি ব্যানবারি বলেছেন, পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে সংক্রমণের হার কিছুটা কমানো গেছে, তবে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এটি, যা মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ আপনি কি তাঁর সাথে একমত?
হ্যাঁ আমারও তাই মনে হয়৷ আমি জানি ব্যানবরি একজন দায়িত্বশীল ব্যাক্তি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবশেষ রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি এ কথা বলেছেন৷ আমরা দেখেছি লাইবেরিয়ায় এর প্রকোপ কমেছে, এমনকি গিনিতেও৷ কিন্তু অন্যদিকে সিয়েরা লিওনে কোনো পরিবর্তন আসেনি৷
আপনি শুরুতে ‘সমাজের ফেব্রিক' বা সামাজিক সমতায় এর বড় প্রভাব পড়বে বলে উল্লেখ করেছেন৷ এটা দিয়ে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন একটু ব্যাখ্যা করবেন কি?
পশ্চিম আফ্রিকার মানুষ ভীষণ আন্তরিক অর্থাৎ খোলামেলা স্বভাবের৷ তারা একে-অপরকে আলিঙ্গন করে, হাত মেলায়, অর্থাৎ শারীরিক সংযোগটা তাদের মধ্যে খুব বেশি৷ কিন্তু ইবোলা সংক্রমণের আশঙ্কায় তাঁরা এ সব থেকে এখন বিরত থাকছেন৷ রাস্তাঘাট, ব্যাংক, রেস্তোরাঁ – প্রতিটি স্থানে আপনি এই পরিবর্তনটা দেখতে পাবেন৷ এতে মানুষে-মানুষে একটা বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে৷ সমাজের এতদিনের অতি পরিচিত চিক্রটা পাল্টে যেতে পারে৷
জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে?
একথা এরই মধ্যে বহুবার বলা হয়েছে৷ আবারো বলছি, আমরা এ বিষয়টিতে অনেক দেরিতে প্রতিক্রিয়া করেছি৷ কেবল জার্মানিই নয়, পশ্চিমা বিশ্বের সব দেশ এমনকি জাতিসংঘ ইবোলা বিষয়ে অনেক দেরিকে কাজ শুরু করেছে৷ তবে এ নিয়ে এখন ভাববার কিছু নেই৷ বরং ভবিষ্যতে এ অভজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে৷ জার্মান সেনাবাহিনী এরই মধ্যে সেখানে কাজ করছে৷ গবেষণাগারে একটি ‘সিরাম' তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে৷
ওয়াল্টার লিন্ডার জার্মানির ইবোলা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি৷ ২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কেনিয়ায় জার্মান রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন৷