হত্যার দায় স্বীকার
৪ জুন ২০১৪আরো একজন আটক র্যাব কর্মকর্তা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন বলে জানা গেছে৷
বুধবার দুপুরের পর নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে মেজর আরিফ জবানবন্দি দেন৷ এর আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁকে আদালতে নেয়া হয়৷
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘‘মেজর আরিফ আদমজী এলাকায় র্যাব-১১'র সদর দফতরে লেফটেনেন্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ-এর সঙ্গে বসতেন৷ তাঁর জবানবন্দি নেয়ার পর লে. কমান্ডার এম এম রানাকেও আদালতে নেয়া হয়৷ তাঁরও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার সম্ভাবনা আছে৷''
জানা গেছে, মেজর আরিফ হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে সাতজন অপহরণ এবং হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন৷ হত্যাকাণ্ড এবং অপহরণে কে, কিভাবে অংশ নেন তারও বর্ণনা দেন৷ হত্যাকাণ্ডের স্থল এবং কিভাবে লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয় তারও বর্ণনা আছে জবানবন্দিতে৷ তিনি নিজেও অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেন৷
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্তকর্তা জানান, আরিফের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে সাত খুনের পুরো ঘটনা এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে৷
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়৷ ৩০ এপ্রিল তাঁদের লাশ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে৷ এরপর নিহত নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নজরুলের প্রতিপক্ষ নূর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা ঘুস নিয়ে র্যাব-১১'র কমান্ডার লেফটেনেন্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার এম এম রানা সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করে৷ ঘটনার পরে র্যাবের এই তিন সেনা এবং নৌ কর্মকর্তাকে র্যাব থেকে প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়৷ পরে আদালতের নির্দেশে তিনজনকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক দফা রিমান্ডে নেয়া হয়৷
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি প্রশাসনিক তদন্ত কমিটিও কাজ করছে৷ তাঁদের তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷ তাঁরা চলতি সপ্তাহেই আদালতে তদন্তের আগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন৷
পুলিশ এবং প্রশাসনিক উভয় তদন্তেই হত্যাকাণ্ডে র্যাব কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গেছে৷ তবে র্যাবের বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাজ কবে শেষ হবে তা জানা যায়নি৷