সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫সাগর-রুনির পরিবারের সদস্যরা বিচারের আশায় পার করে দিয়েছেন তিন বছর৷ এখনও তাদের প্রতিক্ষার শেষ নেই৷ ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই বিষয়টি তুলে এনেছেন রুনির ছোট ভাই নওশের রোমান৷ ফেসবুকে মঙ্গলবার তিনি লিখেছেন, ‘‘ক্লান্ত, হতাশ, ক্ষুব্ধ,বিচারের আশায় থাকতে থাকতে৷ তিন বছর, ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৩৬ মাস পার হলো৷ এই বিচার দেওয়ার কেউ নাই তাই বিচার পাওয়ার আশাও ছেড়ে দিয়েছি৷ আল্লাহ-র কাছে বিচার চাওয়া ছাড়া রাষ্ট্রের কাছে বিচার প্রত্যাশা করা করা নিজেদের উপহাস করা ছাড়া আর কিছুই না৷''
তিনি লিখেছেন, ‘‘কিন্তু যে শিশুটি বিদেশের সুন্দর জীবন ছেড়ে বাংলাদেশে এসে নিজের চোখের সামনে বাবা-মাকে খুন হতে দেখে, এবং পরবর্তীতে সারা জীবনের জন্য শুধু বাবা-মার আদরবঞ্চিত করাই নয়, রাষ্ট্র বিচারের নামে উপহাস করে তখন এই শিশুটির এই দেশের প্রতি কী ধারণা হতে পারে??? এই দেশের মানুষই বা কী জবাব দিবে তাকে?? শুধু এক মেঘ না, উপহাস আর জবাবদিহিতার অভাবে প্রতিদিন মেঘের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷''
ব্লগার আরিল ক্লকারহেগ ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন একটি ব্যানার৷ সামহয়্যার ইন ব্লগের প্রথম পাতায় থাকা ব্যানারটিতে সময় গণনা চলছে৷ সেই ব্যানারে প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী, পেরিয়ে গেছে ১০৯৭ দিন৷ ফেসবুকে আরিল লিখেছেন, ‘‘তিন বছর পরও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড এক রহস্য হিসেবে রয়ে গেছে৷ সাহারা খাতুন বলেছিলেন, খুনিরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়বে৷ আজ ১০৯৭ দিন!''
তিনি লিখেছেন, ‘‘সাগর-রুনি অনেক কিছু জেনে ফেলেছিলেন যা জানার অধিকার আমাদের নেই৷ তবে ব্লগাররা ভুলে যায় না৷ ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে প্রতিদিন আমরা তোমাদের মনে করছি৷''
স্ট্যাটাসের বাকি অংশ আরিল লিখেছেন বাংলায়, ‘‘আমরা ব্লগার, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করার জোর দাবি জানাচ্ছি...৷''
ফেসবুকে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রকাশিত অনেক মতামতেই জায়গা পেয়েছে খুনিদের বিচার না হওয়ার বিষয়টি৷ নিউজ এনআরবি-র প্রধান সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম নাসিম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘অনলাইন জুড়ে ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন – কী ছিল সাগরের ল্যাপটপে? তিন বছরেও নাকি কোনো কুলকিনারা করতে পারলো না গোয়েন্দারা৷ পারবে কী করে – যদি বেড়ায় খায় ঘাস, সর্ষে থাকে ভূত৷''
এছাড়া সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর তুলে এনেছেন আন্দোলনে সাংবাদিক নেতাদের ব্যর্থতার কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘সাগর-রুনি হত্যার পর যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, কিছু সাংবাদিক নেতা তা গিলে ফেলেছেন৷ এর পরিবর্তে তাদের জীবনযাপন পাল্টে গেছে৷ তারা বড় বড় পজিশনে চলে গেছে পুরস্কার হিসেবে৷ অসুবিধা নেই৷ একদিন সেই ক্ষমতাও তাদের খাবে, কর্মফলই বলে দেবে কি হবে তাদের! আমি তা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি৷''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ