সাইকেলের নিরাপত্তা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি
৯ অক্টোবর ২০১৭স্পিড-পেডেলেক্স সাইকেল জগতের এসইউভি গাড়ির মতো৷ এমন সাইকেল হাতে পেলে প্রশিক্ষণ ছাড়াই ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে চালানো যায়৷ অবশ্য তাতে ইঞ্জিনের কিছুটা অবদানও থাকে৷
কাঠামোর মধ্যেই ব্যাটারি, অনবোর্ড কম্পিউটার ও জিপিএস মডিউল বসানো রয়েছে৷ টাচস্ক্রিনের মাধ্যমে সেসব ব্যবহার করা যায়৷ সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় গিয়ার বদলানো হয়৷ ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যাটারি চার্জের প্রয়োজন নেই৷ তাছাড়া ব্রেক করলেই ব্যাটারি কিছুটা চার্জ হয়ে যায়৷
এই সাইকেলের গুণের শেষ নেই৷ মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথাকথিত এই ‘স্মার্ট বাইক' অ্যাপ দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব৷ মাইস্ট্রোমার কোম্পানিরনুশা ওয়াকিলজাদেহ বলেন, ‘‘অ্যাপের মাধ্যমে আমি সাইকেলে পছন্দমতো কনফিগারেশন পাঠাতে পারি৷ যেমন পেছনের ইঞ্জিনের কাজে ইচ্ছামতো রদবদল করতে পারি৷ এমনকি সাইকেল চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে যদি তার অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকে, তাহলে তার ইঞ্জিন ব্লক করে দিতে পারি৷ তখন আর সেই সাইকেল চলবে না৷ তাছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে সাইকেলের অবস্থানও জানতে পারি৷''
এত উদ্ভাবনী গুণাগুণের মূল্যও কম নয় – প্রায় ৯,০০০ ইউরো গুনতে হয় এই সাইকেলের জন্য৷ তবে সাইকেল সংক্রান্ত বাণিজ্য মেলা ও উৎসবে নিয়মিত যাতায়াত করলে দেখা যাবে, দামী ও উচ্চ মানের সাইকেলের চল কতটা বাড়ছে৷
তবে সাধারণ সাইকেলেও আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব৷ জার্মানিতে বছরে প্রায় ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার সাইকেল চুরি হয়৷ অতি সহজেই সাইকেল চুরি করা সম্ভব৷ ভুক্তভোগীদের জন্য সেই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়৷ ফাররাডইয়েগার কোম্পানির স্টেফি ভুল্ফ বলেন, ‘‘আমার বেশ কয়েকটি সাইকেল চুরি গেছে৷ আমার বয়ফ্রেন্ড মার্টিনের ৩ বছরে ৫টি সাইকেল চুরি হয়েছে৷ তার রেসিং সাইকেল চুরি হওয়ার পর সাইকেল চোরদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করলাম৷''
অ্যালার্মের কানফাটা শব্দ এই সংগ্রামেরই অংশ৷ স্টেফি ভুল্ফ এই সিস্টেমের ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘এর নাম ইনসেক্ট – আমার সাইকেলের রক্ষাকবচ ও ট্রান্সমিটার৷ সাইকেলে ইনসেক্ট বসাতে হবে৷ ব্লুটুথের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে যোগাযোগের পর সে মালিক হিসেবে আমাকে চিনতে শিখেছে৷ এবার কোনো চোর সাইকেল চুরি করার চেষ্টা করলে সেন্সরের মাধ্যমে ইনসেক্ট তা বুঝে ফেলে ১০০ ডেসিবেল তীব্রতায় অ্যালার্ম বাজাবে৷ তাছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে সে আমাকে বার্তাও পাঠাবে৷ তারপরেও সাইকেল নিয়ে পালালে আমাকে তার অবস্থান জানান দেবে৷''
অন্ধকার ঘনিয়ে এলে সাইকেল চালকের জন্য বিপদও বেড়ে যায়৷ তা সত্ত্বেও পথেঘাটে অনেক সাইকেলে যথেষ্ট আলো থাকে না৷ নিয়ম মেনে যথেষ্ট আলো লাগালেও অনেক সাইকেল চালককে সহজে দেখতে পাওয়া যায় না৷ একটি হেলমেট সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে৷ বস্টন শহরের দুই ছাত্রের মাথায় এই ‘লুমোস' তৈরির আইডিয়া এসেছিল৷ ৬০টি এলইডি বাতি ঘন অন্ধকারেও চালকের অস্তিত্ব জানান দেয়৷ ব্রেক করলে হেলমেটে গাড়ির মতোই লাল আলো জ্বলে ওঠে৷ তাছাড়া গতিপথও নির্দেশ করে আলো৷
সাইকেল চালকদেরআরও নিরাপত্তা দিতে লুমোস ছাড়া আরও কিছু আইডিয়া রয়েছে৷ যেমন সাইকেল ও গাড়ির সংঘাতের বেশিরভাগ দুর্ঘটনা একাধিক রাস্তার সংযোগস্থলে ঘটে৷ ব্রিটেনের এক লেজার আলো সাইকেলের সামনে পথের উপর উজ্জ্বল সাইকেলের চিহ্ন ফুটিয়ে তোলে৷ সরাসরি সাইকেলটিকে দেখতে না পেলেও গাড়ির চালকরা সেই আলো দেখতে পান৷
টোমাস ভাগনার/এসবি