হাসপাতালের ওষুধ চুরি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় সরকারি পঙ্গু হাসপাতালের এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই গড়ে উঠেছে ১০/১২টি বেসরকারি ক্লিনিক৷ তারাও হাত-পা ভাঙার চিকিত্সা দেয়৷ ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানকারই মরিয়ম ক্লিনিকে অভিযান চালায়৷ আর ক্লিনিকের স্টোর রুমে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ৷ যার গায়ে লেখা আছে ‘বিক্রির জন্য নয়, বিনামূল্যে বিতরণের জন্য'৷ এই ওষুধের মধ্যে আছে ট্যাবলেট, সিরাপ, ইনজেকশন থেকে শুরু করে তুলা ও ব্যান্ডেজ সবকিছু৷
ক্লিনিকের ম্যানেজার আকরাম হোসেন জানান, পঙ্গু হাসপাতালের কিছু কর্মচারী তাদের নিয়মিত টাকার বিনিময়ে ওষুধ দিয়ে যায়৷ তিনি তার খাতা খুলে তাদের নাম, ফোন নাম্বার এবং কোন মাসে কত টাকার ওষুধ তাদের কাছ থেকে কিনেছেন, তাও দেখান৷ ম্যানেজারের দেয়া নাম এবং ফোন নাম্বার ধরে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায় রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে৷ তিনি হাসপাতালের অপারেশন ওয়ার্ডের ওয়ার্ড বয়৷ হাসপাতালের ওষুধ বাইরে বিক্রির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করলেও মরিয়ম ক্লিনিকে নিয়মিত আসা যাওয়ার কথা স্বীকার করেন৷ স্বীকার করেন ম্যানেজার আকারামের সঙ্গে পরিচয় থাকার কথা৷ তাহলে ওষুধ বিক্রেতাদের তালিকায় তার নাম কীভাবে এলো জানতে চাইলে বলেন, কেউ শত্রুতা করে তালিকায় তার নাম দিয়ে থাকতে পারেন৷
বিষয়টি নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়ালের কাছে জানতে চাইলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, হাসপাতালের ওষুধ চুরির অভিযোগ মাঝেমধ্যেই পান৷ কিন্তু তথ্য প্রমাণের অভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায়না৷ তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি৷ তবে তিনি বলেন, বড় আকারের নয় ছোট খাট চুরির ঘটনা ঘটে৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সেফায়েত উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, শুধু পঙ্গু হাসপাতাল নয় – দেশের আরো অনেক বড় বড় সরকারি হাসপাতালের ওষুধ চুরির অভিযোগ আছে তার কাছে৷ কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে৷ তবে তিনি মনে করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা সত্ না হলে এই ওষুধ চুরি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, বড় বড় সরকারি হাসপাতালের চারপাশে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো গড়েই ওঠে সরকারি হাসপাতালের রোগী আর ওষুধের ওপর নির্ভর করে৷ আর এ জন্য সরকারি হাসপাতালের ভেতরে এবং বাইরে অসত্ চক্র কাজ করে৷
আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা জানান তারা গত এক বছরে এরকম অন্তত ১০টি সরকারি ওষুধের চালান বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে আটক করেছেন৷