ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল
২২ জুলাই ২০১৪এই আবেদনের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাঁদের সনদগুলো ভুয়া পায়৷ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘‘যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা না তাঁরা কেন সেটা দাবি করবেন? অতীতের মতো ভুলের যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে আমরা সচেতন আছি৷ ২০১৪ সালের পর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি আর থাকবে না৷''
সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শুধু সনদ বাতিল করলেই হবে না৷ যেসব সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা করতে হবে৷ কারণ সরকারি চাকরি করতে এসে মিথ্যা তথ্য দেয়া ‘ক্রিমিনাল অফেন্স'৷ এই ধরনের অপরাধের কারণে তাঁদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়৷''
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও বলেছেন, ‘‘সনদ বাতিল হওয়ার তালিকায় যেসব সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী আছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বলা হবে৷ এছাড়া যাঁরা এই ভুয়া সনদ নিয়ে যেসব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তাঁদের সেই সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা এবং যাঁরা আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন তা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করতেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে৷''
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘‘এই সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়ে যেসব সুযোগ সুবিধা নিয়েছিলেন তা কিভাবে বাতিল করা যায় তা মন্ত্রণালয়কে খতিয়ে দেখতে হবে৷ পাশাপাশি আর্থিক সুবিধা ফেরত নেয়াও যেতে পারে৷'' তিনি বলেন, ‘‘খুঁজে দেখতে হবে তাঁরা কিভাবে সনদ পেল? কারা তাদের সনদ দিয়েছে? এর সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে৷ নইলে এ ধরনের চেষ্টা চলতেই থাকবে৷''
সনদ বাতিল হওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ৩০ জনকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, দু'জনকে জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, একজনকে দুই ঠিকানায় সনদ থাকার ভিত্তিতে এবং দু'জনের বয়স উপযুক্ত না থাকায় তাঁদের সনদ বাতিল করা হয়েছে৷ সোমবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়৷
এনএসআই ও জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গেজেট বাতিল হওয়া ৩২ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কোনো গ্রহণযোগ্য দালিলিক প্রমাণ দেখাতে পারেননি৷ এর আগেও ১১৬ জনের গেজেট ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়েছিল৷ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৫১ জনের সনদ বাতিল করা হলো৷
সনদ বাতিল হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ওএসডি থাকা উপসচিব শেখ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সোলায়মান চৌধুরী, ঢাকা ভ্যাট কমিশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (বর্তমানে পিআরএলে) শেখ মাহবুবুল আলম, যমুনা ওয়েল কোম্পানির সাবেক ম্যানেজার মো. গোলাম রব মোল্লা, সোনালী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার এটিএম আব্দুল হাই আছেন৷ এছাড়া অন্যরা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী৷