পিছু হটছে সরকার?
১১ আগস্ট ২০১৪গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়া সম্প্রচার নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করা হয় দ্রুতই৷ তাতে বলা হয় যে, সম্প্রচার নীতিমালা কমিশন হওয়ার আগ পর্যন্ত তথ্যমন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে৷ তার লক্ষণও দেখা দিয়েছিল৷ আদিবাসী দিবসে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরামর্শ দেয়া হয় যে, ‘আদিবাসী' শব্দটি লেখা বা প্রচার করা যাবে না, বলতে হবে উপজাতি৷ কিন্তু সেই পরামর্শকে আমলে নেয়নি সংবাদমাধ্যম৷
এরইমধ্যে এই নীতিমালা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে৷ সাংবাদিক নেতারা রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হলেও সরকার ঘোষিত সম্প্রচার নীতিমালার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন৷ ওদিকে বিরোধী দল বিএনপি এই নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে নীতিমালার প্রতিবাদে কর্মসূচি দিয়েছে৷
এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সোমবার বলেছেন, ‘‘সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে আমার ভয় হয়৷ এটা খুব ভালো কাজ হলেও সংঘাতপূর্ণ রাজনীতিতে এটা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা নিয়ে আরও ভাবতে হবে৷ এটা নিয়ে দলমত নির্বিশেষ সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে৷ সরকারকে বলবো, লেখা হয়ে গেছে – এটাই তো শেষ কথা নয়৷ সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ আছে৷ এ জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার৷ কমিশন হলে এটা অধিকতর গণতান্ত্রিক হবে৷''
একই অনুষ্ঠানে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘‘মন্ত্রী হলে সংযমী হতে হবে৷ চট করে উত্তেজিত হলে চলবে না৷ আগের দিন গালমন্দ, করে পরের দিন ক্ষমা চাইলে হবে না৷ গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ৷ তাই এটাকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্র হয় না৷''
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সোমবার দুপুরে সচিবালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘‘সম্প্রচার নীতিমালা দিক-নির্দেশনামূলক৷ এর আলোকে প্রণিতব্য আইন দ্বারা গঠিত কমিশন সম্প্রচার মাধ্যম সংক্রান্ত বিষয় নিশ্চিত করবে৷ যতক্ষণ পর্যন্ত আইন না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রচলিত আইনই প্রযোজ্য হবে৷''
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সম্প্রচার নীতিমালা কোনো আইন নয়৷ এতে শাস্তির কোনো বিধান নেই৷ তাই কণ্ঠরোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও কল্পণাপ্রসূত৷'' তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ করা হয়েছে, এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে গণমাধ্যমের ওপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ বাড়বে৷ এ অভিযোগ অমূলক৷''
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘‘বরং এ নীতিমালার মাধ্যমে সম্প্রচার মাধ্যমের ওপর থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গুটিয়ে নিয়ে কমিশনের হাতে অর্পণের নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে৷ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার কথা বলা হলেও বাস্তবতা হলো, ক্ষমতার হাত গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে৷''