সমুদ্রপ্রান্তিক এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ দেবে বাংলাদেশ
৩ জুন ২০০৯তৌফিক-ই-এলাহি জানান, প্রথম ধাপে আমরা সম্ভবত দুইটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিকে বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ দেবো৷ পরবর্তীতে আরো কোম্পানিকে এই কাজের সুযোগ দিতে উদার নীতিমালা তৈরি করা হবে৷
জানা যায়, আপাতত অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কনোকো ফিলিপস এবং আইরিস কোম্পানি তাল্লো৷ গত বছর বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত একটি কমিটি এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মনোনয়ন দেয়৷ কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা ত্যাগের আগে কাজ শুরু করার চূড়ান্ত অনুমতি পায়নি তারা৷
গভীর সমুদ্রে আটটি স্থানে অনুসন্ধান চালাতে কনোকো ফিলিপস ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে৷ অন্যদিকে তাল্লো অগভীর সমুদ্রের নয়টি স্থানে অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগ করবে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷
উৎপাদন বন্টন চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ আরো প্রতিষ্ঠানকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যুক্ত করবে বলেও জানান ড. তৌফিক৷ তিনি বলেন, আমার ধারণা, বিনিয়োগকারীরা স্থায়ী কর্মপস্থা এবং সুস্পষ্ট সরকার ব্যবস্থা আশা করে৷ আমরা তাদেরকে এই দুটি বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত করতে চাই৷
জানা যায়, বর্তমান অর্থ বছরে বাংলাদেশ সরকার ৪২ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে, গত বছরে এই আমদানির পরিমান ছিল ৩৬ লাখ টন৷
এই বছর আমদানি বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে তৌফিক বলেন, বর্তমান সরকার ডিজেল ক্রয়ে কৃষকের ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেবে৷ চাষবাদে পানি সরবরাহের জন্য ডিজেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রয়োজনে কৃষিখাতে আরো বেশি অনুদান দেবে সরকার৷
একাধিক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে বিষয়টির গুরুত্ব ফুটে উঠবে৷
এদিকে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে বলে প্রকাশ৷ এই ঘাটতির ফলে বিভিন্ন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়ছে৷
এই ঘাটতি দূর করতে বর্তমান সরকার বিদ্যুতের উৎপাদন ৫০০০ মেগাওয়াটে উন্নিত করার চেষ্টা করছে বলে জানান তৌফিক৷ এজন্য কয়লা দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের দিকেও গুরুত্ব দেয়া হবে বলে মত তাঁর৷
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ দশমিক ৫৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে৷ নতুন করে তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান না করা হলে বর্তমান মজুদ ২০২১ সালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবার আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ আর তাই নতুন অনুসন্ধানের পাশাপাশি বাংলাদেশে মজুদ ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন টন উন্নতমানের কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকেও নজর দেয়া জরুরি৷
প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক