ফ্রাঙ্ক কার্সন
৪ মার্চ ২০১২আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের মানুষ এই ফ্রাঙ্ক কার্সন৷ গত মাসের শেষে প্রলম্বিত অসুস্থতার কারণে ৮৫ বছর বয়সে তাঁর প্রয়াণ ঘটে৷ বয়স এবং অসুস্থতার সংযোগের যা ফলাফল৷ কিন্তু কার্সনের মৃত্যুতে ব্রিটেন আর আয়ারল্যান্ড এই দুটি দেশই একসঙ্গে হারাল একজন এমন মানুষকে, যিনি সারাজীবন সকলকে হাসিয়ে গেছেন৷ না, সস্তা কাতুকুতু দেওয়া রসিকতা নয়, কার্সন ছিলেন সেই কৌতূকাভিনেতা, বা কৌতূককারী, যাঁর কথাবার্তায়, যাঁর ব্যক্তিত্বে আর চিন্তাভাবনায় সমাজচিত্র বাস্তবায়িত হত৷ আর সে কারণেই, কৌতূকের মোড়কে কার্সন আসলে মানুষকে বলতেন সত্য কথা৷ ভাবাতেন কোথায় কোথায় সামাজিক অন্যায় সংঘটিত হচ্ছে৷ তার মোকাবিলা কীভাবে করা যেতে পারে৷
সে কারণেই কার্সনের অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় তাঁর নিজেরই শহর বেলফাস্টে দেখা গেল স্বতস্ফূর্ত জনতার ঢল৷ প্রিয় কৌতূকাভিনেতাকে শেষ বিদায় জানাতে যাঁরা সমবেত হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে নামজাদা ব্যক্তিত্ব অনেকেই ছিলেন৷ যেমন, ব্রডকাস্টার ইয়ামন হোমস, কৌতূকাভিনেতা লেনি হেনরি বা রয় ওয়াকার৷ খেলোয়াড় ডেনিস টেলর বা প্যাট জেনিংস কিংবা গায়িকা ডানা৷ অথবা উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডেপুটি ফার্স্ট মিনিস্টার মার্টিন ম্যাকগিনেস সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতা৷ সেন্ট আনে'স ক্যাথিড্রাল থেকে কার্সনের কফিন বহন করে আনা হয় কবরস্থানে৷ গির্জার প্রধান বিশপ এডওয়ার্ড ডেলির পৌরহিত্যে সমাহিত হন কার্সন৷ সারাজীবন যিনি মানুষকে হাসিয়ে গেছেন, তাঁর প্রস্থানে সমবেত মানুষজন কান্না চেপে রাখেন নি৷
নিজেকে আমোদের প্রধানমন্ত্রী বা ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ফান' বলে ব্যাখ্যা করতেন কার্সন৷ এই কথাটির মধ্যেও সুক্ষ্ম একটা খোঁচা ছিল৷ বলতে চাইতেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়া মানেই গোমড়ামুখে থাকার দরকার নেই৷ সে কাজটাও আমোদে করা যেতেই পারে৷ আর কে না জানে, ফুর্তিতে থাকলেই সবকিছু বেশ চমৎকারভাবে সমাধা হয়ে যায়৷ কঠিন কাজটাও হয়ে যায় সহজ৷
সেই ইঙ্গিতটাই হয়তো দিয়ে গেলেন ‘আমোদের প্রধানমন্ত্রী' ফ্রাঙ্ক কার্সন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা : রিয়াজুল ইসলাম